নড়াইলে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে ৮৭৮ পুলিশ সদস্য
প্রকাশিত : ১২:২৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নড়াইলে ৮৭৮ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন। পাশাপাশি আনসার, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া নড়াইলের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় যাতে কোনও সহিংসতা না হয় এবং তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে দিকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, নড়াইল-১ আসনে ১০২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি কেন্দ্র এবং নড়াইল-২ আসনে ১৪০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। আগামিকাল রোববার সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে পুলিশ, আনসার, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে। এসপি পদমর্যাদার দুইজন বাড়তি ফোর্স অফিসার পেয়েছি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ লাইন্স মাঠে নির্বাচনে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত সভায় দিক-নির্দেশনামূলক কথা বলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনী ফোর্স অফিসার পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ রেজাউল মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শরফুদ্দীন, সহকারী পুলিশ সুপার (পিবিআই) মনিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়া) রিপন চন্দ্র সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
এদিকে, সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নড়াইলে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতায় মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে সড়ককে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নড়াইল-যশোর, নড়াইল-ঢাকা সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহনে তল্লাশি করেন সেনা সদস্যরা। সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর ৫০০ শতাধিক সদস্য গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে নড়াইলে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের দিনসহ আগামি ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন। জেলা রির্টানিং কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের দু’টি আসনে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নড়াইল-১ আসনে পাঁচ প্রার্থী ও নড়াইল-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। ভোটাররা জানান, নড়াইল-২ আসনে মূল আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা ও বিএনপি প্রার্থী ডক্টর এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন-ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এস এম নাসির উদ্দীন, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্র্থী মাহাবুবুর রহমান এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফকির শওকত আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে মাশরাফির প্রতি সমর্থন জানিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এনপিপির (ছালু) প্রার্থী মনিরুল ইসলাম এবং গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে নড়াইল-২ আসনে জাপার (এরশাদ) প্রার্থী দলের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
অপরদিকে, নড়াইল-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবিরুল হক মুক্তি ও বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন-জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিল্টন মোল্যা, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ মোহাম্মদ খবির উদ্দীন ও এনপিপি’র (ছালু) প্রার্থী মুনসুরুল হক।
নড়াইল-১ আসনে ভোটার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১১৩ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৩৮ জন। কালিয়া পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার কলোড়া, বিছালী, সিঙ্গাশোলপুর, সেখহাটি ও ভদ্রবিলা ইউনিয়ন নিয়ে নড়াইল-১ আসন গঠিত। বিগত নির্বাচনে এ আসনে পাঁচবার আওয়ামী লীগ, দু’বার করে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এবং একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) বিজয়ী হন।
নড়াইল-২ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫১১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৬২৪ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৭ জন। নড়াইল ও লোহাগড়া পৌরসভাসহ এ আসনের অধীনে সদর উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন এবং লোহাগড়ার ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। বিগত নির্বাচনে এ আসনে পাঁচবার আওয়ামী লীগ ও একবার মহাজোটের প্রার্থী এবং দুইবার করে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
একে//
আরও পড়ুন