ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে অসুস্থ ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭

পবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:৪৬, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

র‍্যাগিংয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিলেও রাতভর র‍্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ৩ শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৭ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। এম. কেরামত আলী হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪ সেশন) সকল শিক্ষার্থীরা র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেওয়া হয়। র‍্যাগিং চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই অমানবিক নির্যাতন এর কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত বারোটায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের গনরুমে এসে আমাদের সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদেরকে কান ধরে উঠা বসা করতে বাধ্য করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলে, সিগারেটের ধোয়ায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গণরুমে। এছাড়াও আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।

এ খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মোঃ আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গণরুমে ঢুকে র‍্যাগিং দেওয়ার সাথে যুক্ত দুই জনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন এবং ক্যান্টিনে গিয়ে চারজনকে র‍্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। 

এ পর্যন্ত পবিপ্রবি প্রশাসন থেকে পাওয়া বক্তব্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ সেশনের ৭ জন শিক্ষার্থী এ কাজে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন।

পরিস্থিতি অনুযায়ী ৩ জন অসুস্থ শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হওয়ায় রাতেই তাদেরকে পবিপ্রবির হেলথ কেয়ারের কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলেন এবং রাতেই পবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে উক্ত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, “এ পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। উক্ত ঘটনার সাথে যে বা যারা যুক্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে এজন্য পবিপ্রবি প্রশাসন আরো ও অধিক তৎপর হবে এবং এ জন্য সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।”

উক্ত ঘটনায় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম রোববার সকালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে সর্বোচ্চ সু-চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

উপাচার্য বলেন, “আমরা অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ের দায়ে আজই হল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সাথে সভা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তাদের সুপারিশক্রমে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদেরকে একাডেমিকসহ অধিকতর শাস্তির আওতায় আনা হবে।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি