পরিবেশবান্ধব কারখানার গুরুত্ব বাড়ছে
প্রকাশিত : ১৩:১০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৩:১১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
বৈশ্বিক তৈরি পোশাকের বাজারে অবস্থান সুসংহত করতে গ্রীন ফ্যাক্টরি বা পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। তারা বলছেন, শুরুতে বাড়তি বিনিয়োগ লাগলেও কর সুবিধা ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহারে পরবর্তিতে খরচ কমে যায়। অন্যদিকে, বিদ্যমান সহায়তাগুলো আরও বাড়ালে গ্রীন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বাড়বে বলে মত পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের।
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশবান্ধব কারখানা বা গ্রীন ফ্যাক্টরির গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। ক্রেতাদের পছন্দ ও সরকারের দেয়া কর সুবিধায় দেশের উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছেন পরিবেশবান্ধব কারখানা নির্মাণে।
করোনা পূর্ববতি সময় পর্যন্ত বাংলাদেশে গ্রীন ফ্যাক্টরির সংখ্যা ছিল ৫ শতাধিক। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০৮টি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত।
দেশের পরিবেশবান্ধব এসব কারখানার কর্মপরিবেশ আন্তর্জাতিক মানের। কর্মীদের শরীর-মন ভালো থাকায় কাজের বাড়তি উৎসাহ পান তারা।
শ্রমিকরা জানান, বাইরে গাছগাছালি আছে, দুপুরের খাবারের জন্য বের হলে ওখান থেকে আমরা প্রাকৃতিক অক্সিজেন পাই। সব কারখানা গ্রীন করলে সব শ্রমিকদের জন্যই ভালো হবে জানান তারা।
শুধু উন্নত কর্মপরিবেশ নয়, গ্রীন ফ্যাক্টরির শ্রমিক তুলনামূলত বেশি সুবিধা পান বলে জানান কর্মকর্তারা।
এউএইচএম লিমিটেডের সহকারী ম্যানেজার ইফতি খায়রুল আলম বলেন, বেতনের বাইরেও শ্রমিকদের অনেক ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে থাকি। যেটা অবশ্য কোম্পানির আইনে নেই।
সহকারী ম্যানেজার আসিফুল কবির জানান, এখানে সোলার পাওয়ার প্যানেল লাগাতে হয়, সেখানে বড় ধরনের বিনিয়োগের ব্যাপার থাকে। সেই জায়গায় সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, গ্রীন ফ্যাক্টরি গড়তে বাড়তি বিনিয়োগের প্রয়োজন। এজন্য কর সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি কম সুদে ঋণ সহায়তা জরুরি।
বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রীন ফ্যাক্টরির জন্য সরকার যে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এটা আরও সহজইকরণ করতে হবে। বন্ড কাস্টমসের যে প্রক্রিয়া এগুলো আমরা যেন সহজ করতে পারি সেই ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে, পরিবেশবান্ধব গ্রীন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বাড়লে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বৈশ্বিক অবস্থান আরও মজবুত হবে। পাশাপাশি পণ্যের ন্যায্যমূল্য আদায়ে বাড়বে দরকষাকষির সুযোগও। এমনটা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এই ধরনের বিনিয়োগকে ব্যয়ের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের অংশ হিসেবে দেখা, যাতে করে উদ্যোক্তারা বা ব্রান্ড বায়াররা তাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে আগামীতে বাড়তি অর্ডার প্লেস করেন। গ্রীন ফ্যাক্টরির সুবিধা নিয়ে আরও হাই ভ্যালু আইটেম বা ওই ধরনের ব্রান্ড বায়ারদের সাথে যোগাযোগ করা, যে সমস্ত ব্রান্ডবায়াররা এগুলোর মূল্য দিয়ে থাকেন।
তৈরি পোশাক খাতের কর্পোরেট ট্যাক্স সাড়ে ১২ শতাংশ। তবে ১০ শতাংশ হারে কর্পোরেট ট্যাক্স দিচ্ছে এখাতের গ্রীন ফ্যাক্টরিগুলো। এছাড়া ডে-লাইট, সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারে গ্রীন ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন খরচও কিছুটা কম।
ভিডিও-
এএইচ/
আরও পড়ুন