পানি পর্যাপ্ত না খেলে হতে পারে যেসব রোগ
প্রকাশিত : ১৬:৫৬, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৭:০৪, ৩০ অক্টোবর ২০১৮
তাসনিম আশিক
পানির অপর নাম জীবন। তাই নিয়মিত পানি খাওয়া খুব জরুরী। কিন্তু শীতকালে গরমকালের তুলনায় পিপাসায় কিছুটা কম থাকার কারণে অধিকাংশ সময় পানি খাওয়া হয় না অথবা খেলেও পরিমাণ মতো খাওয়া হয় না। ফলে দেখা দেয় নানান সমস্যা।
পানি কম খেলে যেমন ভুগতে হয় পানিশূন্যতায় তেমনই দেখা যায় কিডনির সমস্যার মতো বড় সমস্যাও। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সচেতনতা। যতো ব্যস্ত থাকুন না কেন নিয়মিত পানি খাওয়ার ব্যাপারটি সবসময় মাথায় রাখুন।
কারণ পানি আমাদের শরীর কে সতেজ রাখে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
পর্যাপ্ত পানি না খেলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-
প্রথমত ডিহাইড্রেশন হয়ে থাকে। পানি শূন্যতার কারণে শরীর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। শরীর তার স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে না। তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া,মুখের ভেতরে শুকনো ভাব, মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা, পেশির দুর্বলতা, শরীরের দুর্বলতা অনুভব করা। এমনভাবে চলতে থাকলে এসব নানা রোগ বাসা বাধে শরীরে।
মাথাব্যথা : প্রত্যেক মানুষ কোনো না কোনো সময় মাথাব্যথা দেখা দেয়।মাথাব্যথার সাধারণ কারণগুলো হলো, অবসাদ, ক্লান্তি কিংবা দুশ্চিন্তা। তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন মাথাব্যথার একটি বড় কারণ পানি পান না করা।
কোষ্ঠকাঠিন্য : বয়স বৃদ্ধি ও খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার একটি বড় কারণ পানি পান না করা। পানি ও পানিযুক্ত খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমবে। এছাড়া শরবত বা তরল খাবার পান করা, বেশি করে শাক-সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাঁটাচলা করা কোষ্ঠকাঠিন্য কমে আসে। হজমের জন্য পানি খুবই জরুরি। গ্যাস্ট্রিক, বুক জ্বালা অনেকটা কমে যায় নিয়মিত পরিমানমত পানি পান করার ফলে।
শারীরিক শক্তির মাত্রা হ্রাস পাওয়া:
সঠিক সময় ও পরিমানমত পানি পান না করলে,শরীরে পানিশূন্যতার দেখা দেয়। ফলে আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরে শক্তির মাত্রা হ্রাস পায়।
পরিমানমত পানি পানের উপকারিতা: কিডনীর কার্যকারিতা সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য পানি অনেক সাহায্য করে। শরীরের ক্ষতিকর বিষাক্ত উপাদান যেমন :ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ক্রিয়েটিনিন, ইত্যাদি দুর করে।
ত্বক ও শরীর হাইড্রেট রাখে ফলে ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আমাদের শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ফলে ব্রণ, অ্যাকনে প্রভৃতি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরকে রোগ মুক্ত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে পানি। পানি পান করলে পেশি, হাড় সুস্থ থাকে ও সেই সাথে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
দৈনিক কতটুকু পরিমান পানি পান করা উচিত:
সাধারণ অবস্থায় একজন পুরুষের দৈনিক জন্য মিনিমাম ৩ লিটার বা ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। নারীর জন্য ২ লিটার বা ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। এ ছাড়া গর্ভকালীন অবস্থায় বেশি পানি পান করতে হবে।
সুতরাং কাজের প্রয়োজনে বাহিরে যেতেই হয় এজন্য সাথে অবশ্যই পানির বোতল রাখার অভ্যাস করুন। নির্দিষ্ট মাপের বোতল থেকে পানি খান তাহলে দিনে কতটুকু পানি খেলেন তার পরিমাপ বোঝা যাবে। পরিমানমত পানি পান করুন এবং সুস্থ থাকুন।
লেখক: তাসনিম আশিক পুষ্টিবিদ।