ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

পার্টিতে রণবীরকে চড় মারেন সালমান!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৪, ২০ এপ্রিল ২০২০

ঋষি কাপূর এমন এক জন মানুষ, যিনি সব সময় মনের কথা টুইটারে শেয়ার করে থাকেন। আর তার ঠিক উল্টো স্বভাবের হলেন সালমান খান। সালমানের কাছে এক বার যিনি খারাপ হয়ে যান, সারা জীবন সালমান তাঁর প্রতি সমান মনোভাব নিয়ে চলেন। অপছন্দের মানুষেরা সালমানের কাছে জড় বস্তুর মতো। তিনি যেন দেখেও দেখেন না তাঁদের। ঠিক এ রকমই সম্পর্ক সালমান খান আর ঋষি কপূরের মধ্যে।

সালমান খান আর ঋষি কাপূর বহু বছর ধরেই একে অপরের বিরুদ্ধে থেকে গিয়েছেন। সময়ে সময়ে তাঁদের বিভিন্ন সাক্ষাত্কার বা মন্তব্য থেকে এই বিষয়টা আরও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কবে এবং কী ভাবে তাঁদের দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের এমন অবনতি হল?

সালমানের বাবা সেলিম খানের সমসাময়িক অভিনেতা হলেন ঋষি কপূর। শুরু থেকেই কিন্তু সালমানের সঙ্গে ঋষি কপূরের এমন সম্পর্ক ছিল না। দু’জনে একসঙ্গে ‘ইয়ে হ্যায় জলবা’ ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। এর কিছু বছর পর এমন একটা ঘটনা ঘটে যা কাপূর এবং খান পরিবারের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি করে।

সালমান খান তখন কেরিয়ারে সাফল্য অর্জন করছেন। নামও হয়েছে তাঁর। এক বার বন্ধু সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে মুম্বইয়ে একটি ক্লাবে পার্টি করছিলেন সালমান। সেই পার্টিতে বন্ধুদের সঙ্গে হাজির ছিলেন রণবীর কপূরও। রণবীর তখনও বলিউডে পা দেননি।

কোনও একটা বিষয় নিয়ে সালমান আর রণবীরের মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। কথায় কথায় রণবীরকে চড় মারেন সালমান খান। তখন সঞ্জয় দত্ত দু’জনের মাঝে দাঁড়িয়ে তাঁদের শান্ত করান। পার্টি ছেড়ে চলে যান রণবীর। এই ঘটনা যখন সালমানের বাবা সেলিম খানের কানে যায়, তিনি সালমনাকে কাপূর পরিবারের গিয়ে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু সালমান ছিলেন নাছোড়বান্দা। বাধ্য হয়ে সেলিম খানই ছেলের তরফে রণবীর এবং ঋষি কপূরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।

বিষয়টা এখানেই মিটে যেতে পারত। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। পরবর্তীকালে রণবীরের সঙ্গে সালমানের সম্পর্ক অনেক স্বাভাবিক হলেও ঋষি কাপূরের মনে সালমানের প্রতি এবং সালমানের মনে ঋষি কাপূরের প্রতি ক্ষোভ ক্রমে গভীর হয়েছে।কাপূর পরিবার থেকে সালমান আরও চোট পেয়েছিলেন যখন তাঁর গার্লফ্রেন্ড ক্যাটরিনা কইফ তাঁকে ছেড়ে রণবীরের সঙ্গে প্রেম করতে শুরু করেন। সালমান সাধারণত জোর করে কোনও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ঘোর বিরোধী। কিন্তু ঋষি কাপূর তাঁর বাবার সমসাময়িক অভিনেতা হওয়ায় রণবীরের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখেন তিনি।

এর পর ২০১১ সালের ‘টেল মি ও খুদা’-তে ঋষি কাপূরের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় সালমান খানকে। শোনা যায়, ঋষি কাপূরের সঙ্গে অভিনয়ের কোনও ইচ্ছা সালমানের ছিল না। কিন্তু ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর অনুরোধে রাজি হন সালমান। ২০১৫ সালে ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলার শুনানির সময় পুরো বলি ইন্ডাস্ট্রি সালমানের পাশে ছিল। টুইট করে সালমানের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন ঋষি কপূরও। কিন্তু তার পরই তাঁর বয়ান পাল্টে যায়।

সালমানের পক্ষে সওয়াল করেন কয়েক জন তারকা। তাঁরা এই ঘটনার দায়ভার সবটাই সরকারের উপর চাপান। তাঁদের কারও মন্তব্য ছিল, ফুটপাথ শোওয়ার জায়গা নয়, তো কারও মন্তব্য ছিল, সরকার গরিবদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। এঁদের প্রত্যুত্তরে ঋষি কাপূর তাঁদের সালমানের ‘চামচা’ বলে মন্তব্য করে বসেন। আর সালমানের প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ দেখিয়ে ফেলেন। এর পর অবশ্য সালমানের ভক্তেরা ঋষি কপূরের সমালোচনা শুরু করেন। সালমান তখনও চুপ করে ছিলেন। জানুয়ারি ২০১৭ সালে ঋষি কাপূরের আত্মজীবনী ‘খুল্লাম খুল্লা’ প্রকাশ পায়। তাতে ঋষি সেলিম খানের বিরুদ্ধে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকির কথা উল্লেখ করেন। তখনও পর্যন্ত ঋষি কপূরের বিরুদ্ধে একটাও মন্তব্য করেননি সালমান খান।

কিন্তু মুম্বইয়ের হোটেলে সোনম কপূরের রিসেপশনের পার্টিতে সমস্ত সহ্যের সীমা পার করে ফেলেছিলেন সালমান খান। শোনা যায়, এই পার্টিতে সালমান খানের ভাইয়ের স্ত্রী সীমা খানের সঙ্গে নাকি ভীষণ দুর্ব্যবহার করেন ঋষি কাপূর। সালমানের নামে অনেক খারাপ মন্তব্যও করেন তিনি। সীমা খান এই ব্যবহারে অত্যন্ত বিরক্ত হন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ঋষি কাপূরকে পার্টি থেকে সরিয়ে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রী নীতু কপূর। এর পর সালমান খানের কানে কথা পৌঁছয়। তাঁদের সম্পর্কের মাঝে তাঁর পরিবারকে টেনে আনায় বিরক্ত হয়েছিলেন সালমান।

এত দিন সালমান খান ঋষি কাপূরের বিরুদ্ধে একটাও মন্তব্য করেননি। তাঁকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে চলছিলেন। কিন্তু এর পর এক সাক্ষাত্কারে সালমানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, অমিতাভ, অনিল এবং ঋষি কাপূরের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে দ্বিতীয় ইনিংসে কে দারুণ ব্যাট করছেন। প্রশ্নের উত্তরে অমিতাভ এবং অনিলের নামে ভূয়সী প্রশংসা করেন সালমান। ঋষি কপূরের নামটাই পুরোপুরি এড়িয়ে যান। সরাসরি নাম না নিয়েই তাঁর মনে ঋষি কপূরের স্থান কী, সে দিন তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বলেই মনে করেছিল বলিউড।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি