ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

‘পাসপোর্ট পেতে হলে হিন্দু হয়ে যান’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৫৯, ২১ জুন ২০১৮

পাসপোর্ট নবায়ন করতে যাওয়া এক সেবাপ্রার্থীকে হিন্দু হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা।

সম্প্রতি ভারতের লখনৌয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তন্বী শেঠ খুবই অপমান বোধ করেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী টুইটারে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি  লখনৌয়ের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে পাসপোর্ট নবায়ন করতে গেলে বিকাশ মিশ্র নামের এক পাসপোর্ট অফিসার সকলের সামনে তাকে প্রশ্ন করেছেন যে বিয়ের পরও কেন তিনি নিজের পদবী পরিবর্তন করেন নি।

তার স্বামীকেও ডেকে বলা হয় যে পাসপোর্ট নবায়ন করতে হলে তাকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ট্যাগ করে পাঁচ ভাগে পোস্ট করা টুইটে শেঠ লিখেছেন, তিনি আনাস সিদ্দিকিকে ১২ বছর আগে বিয়ে করেছেন, তাদের ছয় বছরের একজন সন্তানও রয়েছে।

কিন্তু ভারতের বেশীরভাগ নারীই যেমন বিয়ের পরে পদবী বদল করে স্বামীর পদবী রাখেন, সেটা তিনি করেন নি।

শেঠ লিখেন, একজন মুসলিমকে বিয়ে করেও কেন পদবী বদল করি নি, সেই প্রশ্ন তুলে আমার পাসপোর্টের নবায়ন আটকে দেন বিকাশ মিশ্র নামের ওই অফিসার। সবার সামনে আমাকে অপমান করেছে। এমনকি আমার স্বামীকে ডেকে পাঠিয়ে বলা হয় যে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করলে তবেই পাসপোর্ট নবায়ন করা হবে।

সুষমা স্বরাজকে উদ্দেশ্য করে তন্বী শেঠ লিখেছেন, বিচারের প্রতি এবং আপনার প্রতি আমার গভীর আস্থা নিয়ে, একই সঙ্গে মনে প্রচণ্ড রাগ আর অনিশ্চয়তার মধ্যে এই টুইট করতে হচ্ছে আমাকে। বিকাশ মিশ্র নামের ওই পাসপোর্ট অফিসার প্রশ্ন তুলেছেন কেন আমি একজন মুসলমানকে বিয়ে করেছি, আর কেনই বা আমি বিয়ের পরে পদবী বদল করি নি। বিয়ের পর থেকে কোনও দিন এত অপমানিত হই নি।

লখনৌয়ের রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার পীযুষ ভার্মা বুধবারই সংবাদ মাধ্যমের কাছে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই দম্পতিকে নিজের দপ্তরে ডেকে তাদের হাতে পাসপোর্ট তুলে দিয়েছেন তিনি।

ভার্মা জানিয়েছেন, "পাসপোর্ট নবায়নের জন্য যে সব নথি ওরা জমা দিয়েছিলেন, তাতে কোনো অসঙ্গতি নেই। তাই নতুন পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যে অফিসার ওই দুর্ব্যবহার করেছিলেন, তাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে, সঙ্গে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিয়ের পরে নারীরা পদবী বদল করবেন কিনা, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পদবী বদল করতেই হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই ভারতে। অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীও আজকাল বিয়ের আগের পদবীই রেখে দেন, অনেকে আবার পুরনো পদবীর সঙ্গে স্বামীর পদবী - একসঙ্গে দুটিই ব্যবহার করেন। আইন অনুযায়ী কোনও সরকারি কাজকর্মে বা নথিতে এই নিয়ে বাধ্যবাধকতা নেই।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি