পীরের ফতোয়ায় ৫২ বছর ভোট দেননা যে ইউপির নারীরা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:৩৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
পীরের ফতোয়ায় ভোট দেননা চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জের রুপসা ইউনিয়নের নারী ভোটাররা। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন নির্বাচনেই তারা ভোট দেননি। বর্তমানে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের চেষ্টায় নারীদের ভোট প্রয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হয়েছে। বিজ্ঞানে আধুনিকতায় এগিয়ে গেছে দেশ। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে নারী-পুরুষ একসঙ্গে।
এমন বাস্তবতায় পিছিয়ে রয়েছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের নারীরা। কথিত পীরের আদেশে ঘর থেকেই বের হন না তারা। এলাকায় দেখাও যায়না তাদের।
জনশ্রুতি রয়েছে, স্বাধীনতার আগে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে কলেরা, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে মহামারি দেখা দেয়। এসব থেকে রক্ষা পেতে কথিত পীর নারীদের পর্দায় থাকা এবং বাড়ি থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেন। একসময় পীরের নির্দেশকে ধরে ভোটের সময় নারীদের ভোট না দেয়ার বিকৃত তথ্য প্রচার শুরু হয়।
সেই থেকেই নারীরা ভোটকেন্দ্রে যান না। ভোট না দেয়ার তালিকায় সনাতন ও খ্রিষ্টানসহ অন্য ধর্মের নারীরাও রয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফ হোসেন বলেন, “স্বাধীনতার পূর্ব থেকে এ পর্যন্ত মহিলারা ভোট দেয় তবে সংখ্যায় খুবই কম। তখনকার আমলে এখানে একজন জোনপুরী হুজুর ছিলেন, রোগ-বালাইতে অনেক মানুষ মারা যায় তখন তিনি নারীদেরকে আরও পর্দানশীল ও ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।”
এই ইউনিয়নে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৩৩০ জন। নারী ভোটার ১২ হাজার ১১৪ জন। প্রায় সমান সংখ্যক ভোটার হওয়া সত্ত্বেও নারী ভোটাররা ভোট না দেয়ায় যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে পরে বিরূপ প্রভাব। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে একজন ছাড়া আর কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
এক নারী ভোটার বলেন, “ভোট দেয়া নাগরিক অধিকার, পর্দা করে নিজের ভোট দিতে কোনো সমস্যা নেই। আগের চেয়ে মানুষ অনেক বেশি সচেতন।”
সম্প্রতি প্রশাসনের চেষ্টায় এ প্রথা ভাঙতে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। তাদের আশা, এবার নির্বাচনে ভোট দিতে আসতে পারেন নারী ভোটাররা।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চেষ্টা করা হচ্ছে নারী ভোটার যারা ভোট দেননা তারা যেন আসেন। সেজন্য বেশকিছু দিন ধরে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। উনারা অনেকেই রাজি হয়েছেন।”
নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, ১৬ নম্বর রুপসা ইউনিয়নে মোট ভোটার ২৪ হাজার ৪৫৪ জন।
এএইচ