ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে কমছে বিদেশি বিনিয়োগ

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত : ১০:৫১, ৪ এপ্রিল ২০২৪

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে কমছে বিদেশি বিনিয়োগ। ফ্লোর প্রাইজের মতো সিদ্ধান্তের কারণে অনেক দিন আটকে থাকায় অতিষ্ট হয়ে বিদেশিরা বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নও নিরুৎসাহিত করছে তাদের। 

দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এখন কতো, তার হিসাব প্রকাশ করে না স্টক এক্সচেঞ্জগুলো। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রতিটি কোম্পানির তথ্যই আলাদা আলাদা করে প্রকাশ করা হয়। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ধারণের তথ্যও আলাদা করে দেয়া থাকে।

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওষুধ খাতের কোম্পানি রেনেটা লিমিটেডে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ২২ দশমিক ৬৭ শতাংশ; কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ দিন পর্যন্ত তা কমে দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশে। একই সময়ের ব্যবধানে গ্রামীণফোনে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৪৪ শতাংশে, লাফার্জ হোলসিমে দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে কমে দশমিক ৫৮ শতাংশে, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসে ২৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ২৮ দশমিক ৫২ শতাংশে এবং তিতাস গ্যাসে দশমিক ১৩ শতাংশ থেকে কমে দশমিক ১০ শতাংশে নেমে এসেছে বিদেশি বিনিয়োগ। 

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘসময় ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বেধে দিয়ে বাজারকে আটকে রাখায় ভূল বার্তা গেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে। এখন তার খেসারত দিতে হচ্ছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন বলেন, “ফ্লোরের কারণে এতো দিন টাকা রিলিজ দিতে পারেনি এখন অনেকেই রিলিজ দিয়ে তার টাকাটা কনভার্ট করে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা বাজারকে তাদেরকে কাছে আকর্ষণীয় করতে পারিনি। তারা মনে করছে, এখন যে অবস্থায় আছে তার চেয়ে অবনতি হতে পারে।”

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “দেড় বছর ধরে জোড় করে ফ্লোরপ্রাইজ দিয়ে বন্ধ মার্কেটটিকে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তো বিদেশিরা এমন কোনো জায়গায় বিনিয়োগ করতে চাইবেনা যেখানে তার ক্যাপিটালটা বা বিনিয়োগটা লকআপ হতে পারে।”

এদিকে, গত প্রায় এক বছরে ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা টাকার মান কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। ফলে অর্জিত মুনাফা ডলারে রূপান্তর করা হলে উল্টো লোকসান হচ্ছে বিদেশিদের। টাকার আরও অবমূল্যায়ন হতে পারে এমন শঙ্কা থেকেও পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছেন অনেক বিদেশি। 

ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “ফরেন এক্সচেঞ্জের কারণে বাংলাদেশ থেকে ডিভিডেন্ট নিয়ে যাওয়া মাঝে মাঝেই সমস্যা হচ্ছে। এখানকার টাকা যখন ফরেন এক্সচেঞ্জে কনর্ভাট হচ্ছে তখন ডিভিডেন্টে কম পাচ্ছে।”

সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন বলেন, “ডলারের বিপরীতে আমাদের কারেন্সি যেহেতু অনেকটা অবমূল্যায়িত হচ্ছে ফলে যতো আগে তারা সেল দিয়ে ডলারে কনভার্ট করতে পারবে ততোই বেশি ডলার সে পাবে।”

পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ধরে রাখতে চাইলে নীতির ধারাবাহিকতার পাশাপাশি মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি