পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে অন্তর্বাস!
প্রকাশিত : ১৩:১৮, ১০ জানুয়ারি ২০১৯
মদ্যপান আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণ পুরুষের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে, এ কথা কমবেশি অনেকেরই জানা। কিন্তু এই সবের সঙ্গে আরও একটি বিষয়কে এই সমস্যার অন্যতম কারণ বলে দায়ী করছে আধুনিক গবেষণা।
পিতৃত্বের স্বাদ পেতে হলে এবার আপনাকে নজর দিতে হবে নিজের পোশাক-আশাকের প্রতিও। শুক্রাণু বা স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে ফেলতে না চাইলে এবার থেকে সচেতন থাকতে হবে অন্তর্বাস বাছার ক্ষেত্রেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি মিলিলিটার বীর্যে দেড় কোটি বা তার বেশি শুক্রাণু থাকাটাই সুস্থতার লক্ষণ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণা আঁটসাঁটো অন্তর্বাসের বদলে বক্সার জাতীয় ঢিলেঢালা অন্তর্বাসেই এই সুস্থতা ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করছে।
সম্প্রতি ৬৫৬ জন ১৮ থেকে ৫৬ বছর বয়সী সুস্থ পুরুষদের নিয়ে একটি গবেষণা চালান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। প্রত্যেকেরই রক্ত ও শুক্রাণুর নমুনা নেওয়া হয় ও অন্তর্বাস সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর চলে। সম্প্রতি তাদের হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত হয় এই গবেষণার রিপোর্ট। তাতে দেখা গেছে, শুক্রাণুর সংখ্যা বা ঘনত্ব দুই ক্ষেত্রেই যে ৩৪৫ জন পুরুষ বক্সার জাতীয় অন্তর্বাস বা ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরেন, তাদের ফলাফল বেশি ভাল।
কেমন তা? গবেষণায় প্রকাশ, এই ৩৪৫ জনের শুক্রাণুর সংখ্যা অন্যদের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। পিতৃত্বের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যতম জরুরি বিষয় শুক্রাণু ঘনত্ব। সেটিও এই ৩৪৫ জনের ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশেরও বেশি ছিল। সক্রিয় শুক্রাণুও ছিল অন্যদের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি।
সারা বিশ্বেই পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ হিসেবে অন্তর্বাসের আদৌ কোনও ভূমিকা আছে কি-না জানতে বিভিন্ন গবেষণা চলছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই গবেষণার প্রধান লিডিয়া মিনগুয়েজ-অ্যালারসিয়ন জানান, সন্তান না হওয়ার কারণ খুঁজতে বসলে জানা যায়, প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষরাও দায়ী থাকেন। অন্য কোনও অসুখ বা যৌনরোগ না থাকলেও সুস্থ পুরুষদের মধ্যেও আজকাল এই বন্ধ্যাত্বের প্রবণতা বাড়ছে। জীবনযাপনের কোন কোন ভুল এই অসুখকে বাড়িয়ে তুলছে, তা দেখতেই এমন গবেষণা।
তবে এই ধরনের গবেষণার সীমাবদ্ধতাও আছে। অন্তর্বাসের কাপড় ঠিক কেমন হওয়া উচিত বা একটানা কতক্ষণ অন্তর্বাস পরা বন্ধাত্বের সমস্যা ঠেকাতে কার্যকর, এমন কোনও তথ্য এখনই উঠে আসেনি গবেষণায়। তবে তা সত্ত্বেও এই গবেষণা এই সংক্রান্ত অসুখ নিরাময়ে নতুন পথের সন্ধান দিতে সক্ষম বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
তার মতে, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এই গবেষণাটি চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এত বেশি মানুষের উপর এমন গবেষণা আগে কখনও হয়নি। তবে খুব আঁটসাঁট অন্তর্বাস শরীরে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ) ক্ষরণে বাধা দেয়। ফলে এর প্রভাবে শুক্রাণু কমে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//