পুরো গ্রামই যখন হোটেল
প্রকাশিত : ১৫:১৩, ৩ অক্টোবর ২০১৮
‘ভূতের গ্রাম’ কোরিপ্পো! সুইজারল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ভেরজাসকা উপত্যকার গ্রামটিতে জনসংখ্যা কমতে কমতে ‘ভূতের গ্রামে’ পরিণত হতে যাচ্ছে। ৭০টি ঘর নিয়ে এ গ্রামে লোকসংখ্যা মাত্র ১২! এদের ১১ জনেরই বয়স আবার ৬৫ বছরের উর্ধ্বে। সাধে কি আর ‘ভূতের গ্রাম’ বলা!
জানা যায়, এক সময় এই গ্রামের বাসিন্দা ছিল ৩০০-এর বেশি। কিন্তু জনশূন্য হওয়ার জোয়ার গ্রামটিতে বাসিন্দাদের উপার্জনের একমাত্র পথ এখন গ্রাম্য রেস্তোরাঁ চালানো। ইতালীয় ভাষাভাষী–অধ্যুষিত গ্রামটির বাড়িগুলোর বিশেষত্ব হলো, দুই শ বছরে এগুলোয় কেউ হাত দেয়নি। একেবারে দুই শ বছর আগের গ্রামীণ আবহ এখনও অবিকৃত রয়েছে গ্রামটিতে। বাড়িগুলোর ছাদ স্লেটের টাইলসে গড়া। আর দেয়াল থেকে বাকি সবকিছু পাথরের। তবে বাস্তবতা হলো, গ্রামটি এখন বিলুপ্তির পথে। তবে এ থেকে বাঁচাতে এবার এগিয়ে এসেছে একটি স্থানীয় সংগঠন ফোন্দাৎসিওনে কোরিপ্পো ১৯৭৫। সংগঠনটি এক অভিনব প্রকল্প নিয়ে এসেছে গ্রামটির শত বছরের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে। পুরো গ্রামটি একটি হোটেলে পরিণত করবে তারা। ফলে পর্যটকদের আনাগোনায় একই সঙ্গে জনারণ্য আর অর্থনীতি চাঙা-দুটোই হলো।
ইতালির শত বছরের ঐতিহ্যে জড়ানো গ্রামগুলোতে গত শতকের ৮০-র দশকে গড়ে তোলা হয় আলব্যার্গো ডিফুজো হোটেল ব্যবস্থা। এই হোটেল গড়ে তোলার ভাবনা ধার করা হয়েছে সেখান থেকেই। এই ব্যবস্থায় পর্যটকেরা গ্রামের সত্যিকারের বাসিন্দাদের আতিথেয়তা লাভ করে। তাদেরই বাড়িঘরে হোটেলের সুযোগ-সুবিধায় থাকে।
আধুনিক পর্যটন হোটেলের সঙ্গে এর বড় পার্থক্য হলো, সুউচ্চ ভবনে হোটেলের কক্ষগুলো এখানে পুরো গ্রামে ছড়ানো থাকে। তাই নাগরিক জীবন থেকে অনেক দূরে সত্যিকারের গ্রামীণ লোকজনের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ ঘটে এতে। গ্রামটিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সুইজারল্যান্ডের প্রথম আলব্যার্গো হোটেল হবে এটি।
সংগঠনটি জানিয়েছে, কোরিপ্পোর ৭০টি বাড়ির মধ্যে ৩০টিতে এই মডেলের হোটেল গড়ে তোলা হবে। চলতি বছরের জুলাইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম কটেজ কাজা আরকদি অতিথিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পুরো হোটেলটি চালু হবে ২০২০ সালে।
একে//