ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

প্রতিদিন হাঁটুন ।। আপনার হৃৎপিন্ড ভালো থাকবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৩৫, ২ আগস্ট ২০২১ | আপডেট: ২০:৩৭, ২ আগস্ট ২০২১

Ekushey Television Ltd.

করোনারি হৃদরোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের জন্যে তো বটেই, আপনার সার্বিক সুস্থতার জন্যেই প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট থেকে একঘণ্টা হাঁটুন। কোয়ান্টাম ইয়োগার সাথে নিয়মিত হাঁটা যুক্ত হলে ব্যায়ামের সবগুলো উপকারই আপনি পরিপূর্ণভাবে লাভ করবেন। আর হৃদরোগীদের সুস্থতার জন্যে নিয়মিত হাঁটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন?

প্রথমত, আমরা জেনেছি, এইচডিএল কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্যে ভালো। প্রয়োজনের তুলনায় এটি যাদের কম, নিয়মিত হাঁটলে তাদের শরীরে এইচডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। দ্বিতীয়ত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, গবেষণায় দেখা গেছে—নিয়মিত হাঁটেন যারা, তাদের হৃৎপিন্ডের চারপাশে কোলেটারাল সার্কুলেশন তৈরি হয়। সেটা কেমন?

আমরা অনেক সময় শুনি, কারো একটি বা কখনো দুটি করোনারি ধমনীতেই রক্ত চলাচল শতভাগ বন্ধ অর্থাৎ ১০০% ব্লকেজ। মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক—তবে তিনি বেঁচে আছেন কী করে? কারণ রক্তনালী শতভাগ বন্ধ হয়ে পড়লে তো হৃৎপিন্ডের কোষ আর পেশিগুলো প্রয়োজনীয় রক্ত ও পুষ্টির অভাবে পুরোপুরি অকেজো হওয়ার কথা এবং রোগীর মারা যাওয়ার কথা। কিন্তু তার ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে না কেন?

এর অন্যতম কারণ হলো, এদের হৃৎপিন্ডের ব্লকেজ- আক্রান্ত ধমনীর চারপাশে কিছু পরিপূরক রক্তনালী সচল   হয়ে ওঠার মাধ্যমে একটি কোলেটারাল সার্কুলেশন গড়ে ওঠে। এখানে যে বিষয়টি ঘটে —হৃৎপিন্ডের করোনারি ধমনীর চারপাশে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালী থাকে, যারা শারীরিক পরিশ্রম করেন, ব্যায়াম করেন, বিশেষত যারা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের এই রক্তনালীগুলো সচল হয়ে ওঠে এবং মূলত এই বিকল্প রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমেই হৃৎপিন্ডের সব অংশে প্রয়োজনীয় রক্ত পৌঁছে যায়।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালীর সংখ্যা কারো কারো ক্ষেত্রে ২০০-২৫০টি পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘ন্যাচারাল বাইপাস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

আর আপনার হৃৎপিন্ডে  ন্যাচারাল বাইপাস বা কোলেটারাল সার্কুলেশন দারুণভাবে তৈরি হতে পারে জোরকদমে হাঁটার মধ্য দিয়ে। প্রতিদিন নিয়মিত অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন। ডাক্তারের বারণ না থাকলে হাঁটার পাশাপাশি কিছুক্ষণ হালকা জগিং করতে পারেন। এতে ন্যাচারাল বাইপাসের সম্ভাবনা আরো ত্বরান্বিত হবে।

তৃতীয়ত, নিয়মিত হাঁটলে দেহের বাড়তি ওজন কমে। উল্লেখ্য, অতিরিক্ত ওজন করোনারি হৃদরোগের একটি অন্যতম কারণ। তাই করোনারি হৃদরোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে হাঁটা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

শুধু তা-ই নয়, যারা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের বয়সজনিত স্মৃতিভ্রম  রোগ আলঝেইমার্সের ঝুঁকি কমে অনেকখানি। এ-ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত হাঁটার গুরুত্ব এখন কমবেশি সবাই জানেন।

কীভাবে হাঁটবেন? আপনার হাঁটার গতি হবে ঘণ্টায় চার মাইল। অর্থাৎ মিনিটে প্রায় ১৩০ কদম। কিন্তু প্রথমদিন হাঁটতে নেমেই এ গতিতে হাঁটতে যাবেন না; হাঁটার গতি প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ান। যদি আপনার হার্টের অবস্থা বিবেচনা করে কার্ডিওলজিস্ট ঘণ্টায় চার মাইল বেগে হাঁটার অনুমতি না দেন, তবে তিনি যেভাবে বলবেন প্রথমে সেভাবেই হাঁটুন। এরপর ধীরে ধীরে গতি বাড়ান।

লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া। 
 
আরকে//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি