প্রথম ৫ মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে
প্রকাশিত : ২০:১৫, ২ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ২২:১৪, ১৭ মে ২০২২
পোশাক রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধির উপর ভর করে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রপ্তানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।
এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৭৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে,একক মাস হিসেবে সর্বশেষ নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৭৯ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ১ হাজার ৫৯২ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।
অন্যদিকে, নভেম্বর মাসে ৩৫৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। সুতরাং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় গত মাসে রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক শুন্য ৪ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের নভেম্বরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক খাতের রপ্তানি আয় ভাল হওয়ায় রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে রপ্তানিমূখী শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘ইউনিট প্রতি পোশাকের মূল্য বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদেশ বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানির অবস্থা ভাল। যেভাবে আমরা ক্রেতাদেশ পাচ্ছি, তাতে মনে করি আগামী কয়েক মাস প্রবৃদ্ধির এই ধারা ধরে রাখতে পারব।’
তিনি বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে বিজিএমইর পক্ষ থেকে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি রপ্তানি সম্প্রসারণের অনেক সুযোগ এখন তৈরি হয়েছে। সেসব সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন, শুল্ক-কর সংক্রান্ত ও ব্যাংকিং জটিলতা নিরসনে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।
ইপিবির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুই-ই বেড়েছে। ১ হাজার ৪১১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় দাঁড়িযেছে ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ৬২ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গতবছরের একইসময়ে এই খাতে রপ্তানি ছিল ১ হাজার ২৮৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
জুলাই-নভেম্বর সময়ে নিট পণ্যের (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৮৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭১৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যের (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৬২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৮৭ কোটি ডলারের। গতবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৫৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।
জুলাই-নভেম্বর এই ৫ মাসে অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার,যার প্রবৃদ্ধি ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে উল্লেখ করার মত।
এ সময়ে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি।
আলোচ্য সময়ে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়জাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ শতাংশ।
এ সময়ে মাছ রপ্তানি হয়েছে ২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের, যা গতবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। এছাড়া টেরিটাওয়েল, হোম টেক্সটাইল ও হস্তশিল্প পণ্যের রফতানি আয়ও বেড়েছে।
এসি
আরও পড়ুন