ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

শুভ জন্মদিন

প্রথাবিরোধী একজন সাহসী লেখক তিনি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৪, ২৮ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ০৮:৪৫, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

তোমাকে মিনতি করি কখনো তুমি বাঙলাদেশের কথা তুলে কষ্ট দিয়ো না।

জানতে চেয়ো না তুমি নষ্টভ্রষ্ট ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের কথা; তাঁর রাজনীতি,

অর্থনীতি, ধর্ম, পাপ, মিথ্যাচার, পালে পালে মনুষ্যমণ্ডলি, জীবনযাপন, হত্যা, ধর্ষণ,

মধ্যযুগের দিকে অন্ধের মতোন যাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন ক’রে আমাকে পীড়ন কোরো না;

আমি তা মুহূর্তও সহ্য করতে পারি না, -তাঁর অনেক কারণ রয়েছে।‘

বাংলাদেশের প্রথাবিরোধী লেখক, কবি ড. হুমায়ুন আজাদের লেখা কবিতা এটি। তিনি ছিলেন একাধারে সমালোচক, ভাষা বিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক, কলাম লেখক, কিশোর সাহিত্যিক এবং ঔপন্যাসিকও। আজ তার জন্মদিন।

১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল (১৪ বৈশাখ, ১৩৫৪ বঙ্গাব্দ), মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে রাঢ়িখালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। যদিও হুমায়ুন আজাদের জন্ম তাঁর নানাবাড়ি কামারগাঁও কিন্তু রাঢ়িখালকে হুমায়ুন আজাদ মনে করতেন তাঁর জন্মগ্রাম।

হুমায়ুন আজাদের আসল নাম ‘হুমায়ুন কবীর’। লেখার জন্য নাম বদল করে শপথপত্রের মাধ্যমে তা স্থায়ী করে নেন। তাঁর অন্যতম প্রণোদনা ছিল প্রথা-বিরোধিতা। কবিতা, উপন্যাস ও রচনা সর্বত্রই তিনি প্রথাবিরোধী ও সমালোচনামুখর। জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর মননশীল এই বহুমাত্রিক লেখকের ৭০টিরও বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭৩ সালে ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ নামে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৯৮০-র দশকের শেষভাগ থেকে হুমায়ুন আজাদ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। সামরিক শাসনের বিরোধিতা দিয়ে তার রাজনৈতিক লেখালিখির সূত্রপাত।

১৯৯২ সালে তিনি লেখেন বহুল আলোচিত গ্রন্থ ‘নারী’। বইটি তৎকালীন সরকার নিষিদ্ধ করে মৌলবাদীদের চাপে পড়ে।

১৯৯৪ সালে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন প্রথম উপন্যাস ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল-এর মধ্যে দিয়ে। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয় সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে। আর এই বইয়ের জন্য তিনি বাংলা একাডেমীর পুরস্কার পেয়েছেন। ২০০২ সালে ১০০০০ এবং আরও একটি ধর্ষণ, ২০০৩ সালে একটি খুনের স্বপ্ন এবং ২০০৪ সালে প্রকাশিত পাক সার জমিন সাদ বাদ। তাঁর অন্য অনেক গ্রন্থের মতো এটিও সমালোচিত হয়। মৌলবাদীরা তাঁর উপর ক্রুদ্ধ হয়। রাজপথ থেকে একসময় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে সংসদে। মৌলবাদীরা প্রকাশ্যে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়।

হুমকিতেই থেমে থাকেনি সেই অশুভ শক্তি। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন তিনি। ঘাতকরা তাকে নির্মমভাবে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করে। বিদেশে নিবিড় চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। এর কিছুদিন পরেই জার্মান সরকার তাকে গবেষণা বৃত্তি প্রদান করে। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি