প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে: ফখরুল
প্রকাশিত : ১৪:৫১, ৪ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ২২:৫৫, ৬ অক্টোবর ২০১৭
প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর আপিলের রায়ের জের ধরে তাঁকে আক্রোশবশত ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়। এটি দেশের বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে একটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় পছন্দ না হলে তা রিভিউ করার সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সরকার দেশের প্রবীণ বিচারপতিকে নজিরবিহীনভাবে ছুটি নিতে বাধ্য করার যে নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তার বিরুদ্ধে দেশের আইনজীবী সমাজের পাশাপাশি সচেতন জনগণ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি মাত্র কয়েক দিন আগে জাপান ও কানাডা সফর করে এসেছেন। এসব দেশে উন্নত চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও তিনি সেখানে কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন বলে দেশবাসী জানে না। এমনকি গত পরশু তিনি সুপ্রিম কোর্টে তাঁর কার্যালয়ে বসে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ফাইল সই করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের সর্বসম্মত রায় দেওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ আদালত এবং তাঁর সম্মানিত বিচারপতিগণকে সরকারপ্রধান থেকে সরকারের মন্ত্রী, সরকারি দল ও জোটের নেতা-কর্মীরা অসাংবিধানিক, অযৌক্তিক ও কুৎসিত ভাষায় সমালোচনা করে চলেছেন। এমনকি জাতীয় সংসদে যে ভাষায় সর্বোচ্চ আদালত ও তাঁর বিচারপতিগণের সমালোচনা করা হয়েছে, তা শুধু অভূতপূর্ব নয়, অস্বাভাবিকও।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, গতকাল আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, তিনি (প্রধান বিচারপতি) নাকি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ছুটি নিয়েছেন। কিন্তু গত পরশু সন্ধ্যায় তাঁর বাসভবনে সাক্ষাৎপ্রার্থী সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তাঁর পক্ষ থেকে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনেই জনৈক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আমি সুস্থ আছি কিন্তু কথা বলতে পারব না। তিনি বলেন, এ সবকিছু থেকে প্রমাণিত হয় যে প্রধান বিচারপতি অসুস্থ নন। তাঁকে জোর করে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে অনুগত বিরোধী দল সাজিয়ে প্রকৃতপক্ষে একদলীয় সরকার কায়েম করেছে। প্রশাসন ও নিম্ন আদালতকে কুক্ষিগত করেছে। অবাধে রাজনৈতিক তৎপরতা চালানো এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত করছে। গুম, খুন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী মতের জনগণের জন্য স্বাভাবিক রাজনৈতিক তৎপরতা চালানো অসম্ভব করে তুলেছে।’
//এআর
আরও পড়ুন