ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

প্রযুক্তির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে চোখের পানি, জেনে নিন প্রতিকার

প্রকাশিত : ১৪:৫৪, ১৪ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ১৫:১৯, ১৪ জুলাই ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

আধুনিকতার হাত ধরে আমরা এখন খুব বেশি যন্ত্রিক হয়ে উঠেছি। দৈনিক কাজের সঙ্গে বিজ্ঞানের আবিষ্কার মিলেমিশে একাকার। বিভিন্ন প্রযুক্ত এখন আমাদের কাজের অংশ হয়ে উঠেছে। দৈনিক কাজের জন্য একটানা আমাদের চোখ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টিভি ও স্মার্ট ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বাড়িতে ফিরেও স্মার্টফোন বা ল্যাপটপেই থাকতে হয় সবাইকে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চোখ। আপনি হয়তো জানেন না যে এতে করে চোখের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন এমনটি চলতে থাকলে চোখের এই শুষ্কতা ডেকে আনতে পারে অন্ধত্ব।

শুষ্ক চোখের সমস্যার একাধিক কারণের মধ্যে একটানা অনেকক্ষণ স্ক্রিনে আটকে থাকাকে চিকিৎসকেরা প্রধান কারণ বলে মনে করছেন।  

চোখের উপরে পানির একটি পাতলা স্তর থাকে। পানি, তেল, পিচ্ছিল মিউকাস এবং জীবাণুরোধী অ্যান্টিবডি দিয়ে তৈরি এই চোখের পানি। চোখের গ্রন্থি থেকে কোনও কারণে পানি নিঃসরণ কম হলে চোখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘চোখে যথেষ্ট পরিমাণে পানি তৈরি না হলে বা সেই পানি লুব্রিক্যান্ট হিসেবে যথেষ্ট না হলে চোখ কড়কড় করে, জ্বালা ভাব অনুভূত হয়। আলোর দিকে তাকানোও যায় না। মিউকাসে ভরে যায় চোখ। ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি।’

যাদের ঝুঁকি বেশি

বয়স বাড়লে অর্থাৎ ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে এই সমস্যা বাড়ে। মেয়েরা মেনোপজ়ের পরেও এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। আবার অতিরিক্ত এসি ঘরে বেশি সময় কাটালেও ড্রাই আইজ়ের আশঙ্কা থাকে। প্রতিনিয়ত দূষিত আবহাওয়াও শুষ্ক চোখের কারণ হতে পারে। আবার কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ঘুমোনোর সময়ে যাদের চোখ পুরোপুরি বন্ধ হয় না এবং স্ট্রোক বা স্নায়ু সমস্যার রোগীদেরও চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। ভিটমিন এ-র ঘাটতিও চোখের পানি কমার কারণ হতে পারে। এই সমস্যা অনেক দিন ধরে চললে এবং ঠিক মতো চিকিৎসা না করলে দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

চোখের শুষ্কতা কমাতে যা করবেন

* হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো বা তুলো ডুবিয়ে রাখুন। সেটি থেকে বাড়তি পানি নিংড়ে চোখের উপরে পাঁচ মিনিট রাখুন। তারপরে আঙুলের হালকা চাপে চোখের উপরের ও নীচের পাতায় মালিশ করুন। কাপড়টি একেবারে ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত করতে হবে। এতে চোখের ময়লা পরিষ্কার করে চোখের পানি বা অশ্রুর মান আগের চেয়ে ভাল করবে। কমে আসবে চোখের লাল বা জ্বালা ভাবও।

* ঘন ঘন ও জোরে জোরে চোখের পাতা ফেলুন। এতে চোখের তরল পদার্থগুলো বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়ে কর্নিয়াকে ভিজিয়ে রাখবে। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে না থেকে ঘন ঘন পলক ফেলার চেষ্টা করুন।

* দীর্ঘ সময় কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখ না রেখে মাঝে মাঝে বিরতি দেওয়া দরকার। কাজের ফাঁকে চোখের কয়েকটি ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। সুযোগ পেলেই সবুজ গাছপালার দিকে তাকান।

 * খুব কম আলো বা অন্ধকারে যেমন কাজ করবেন না, তেমনই অযথা কম্পিউটার ও মোবাইলের ব্রাইটনেস বাড়াবেন না। চোখের লেভেলে মনিটর রাখতে হবে।

 * কম্পিউটার মনিটরে ও চশমায় অ্যান্টিগ্লেয়ার স্ক্রিন এবং চশমায় অ্যান্টি রিফ্লেকটিভ গ্লাস ব্যবহার করাও জরুরি।

 * চোখ তরতাজা রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চোখের ড্রপ বা অয়েনমেন্ট ব্যবহার করুন।

 * খাদ্য তালিকায় তাজা তরিতরকারি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন ছোট মাছ, আখরোট, সয়াবিনের তেল, ডিম রাখতে পারলে ভাল হয়।

চোখের শুষ্কতাকে অবহেলা করা উচিত নয়। এটি কর্নিয়ার ক্ষতি করার পাশাপশি অন্ধত্বের কারণও হতে পারে। সুস্থ থাকতে গেলে রোগের চিকিৎসাই একমাত্র উপায় নয়। প্রাথমিক শর্ত হল সচেতনতা। কর্মব্যস্ততার মাঝেই সময় বার করুন, মেনে চলুন কয়েকটি নিয়ম। তা হলে সুন্দর থাকবে চোখ। ভাল থাকবেন আপনিও।

সূত্র : আনন্দ বাজার

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি