ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ডিজিটাল পদ্ধতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আগামীতে এসএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষায় ছাপানো প্রশ্নপত্রে আর পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ জন্য সব শিক্ষা বোর্ডের জন্য কেন্দ্রীয় `প্রশ্নব্যাংক` তৈরি করা হবে। এই প্রশ্নব্যাংক থেকে পরীক্ষার দিন সকালে কেন্দ্রীয়ভাবে কমান্ড দিলে ডিভাইসে ভেসে উঠবে প্রশ্নপত্র। এ বিষয়ে সংশ্নিষ্ট সকলের মতামত নিতে খুব শিগগিরই একটি সেমিনারের আয়োজন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

পরীক্ষার জন্য নতুন দুটি ডিভাইসের কথা ভাবা হচ্ছে। এগুলোর একটি হলো পরীক্ষার হলে ট্যাবের মতো ছোট একটি ডিজিটাল যন্ত্রের ব্যবহার। এবং অন্যটি পরীক্ষার্থীরা ব্যবহার করবে। এ পদ্ধতিতে ডিজিটাল `প্রশ্নব্যাংকে`র মাধ্যমে অটোমেটিক (স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাৎক্ষণিক) প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশ্নের `কোড` জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ আসনে বসলে তাদের একটি করে ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে দ্বিতীয় বিকল্প পদ্ধতিতে বিজি প্রেসে ছাপানো প্রশ্নপত্র সেখানেই `রিমোট আনলক স্মার্টবক্স` নামক যন্ত্রে ভরা হবে। এই ডিভাইস আনলক করার ক্ষমতাও থাকবে নিয়ন্ত্রিত। এই বক্স খুলতেও ব্যবহার করা হবে বিশেষ পিন নম্বর বা পাসওয়ার্ড। এ ছাড়া এই বক্সে থাকবে বিশেষ অ্যালার্ম সিস্টেম। কেউ প্রশ্নপত্রের বাক্স খোলার চেষ্টা করলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সিগন্যাল যাবে।

পরীক্ষা পদ্ধতি বদলানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ায় দশম শ্রেণিপড়ূয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে নানা শঙ্কা কাজ করেছে। কারণ এই পরীক্ষার্থীরা আগামী বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী।

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, নতুন করে কোনো পদ্ধতি চালু করার আগে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। তা না হলে ভবিষ্যতে নানা জটিলতা এড়ানো যাবে না।

শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন জানান, এ পদ্ধতিতে ইন্টারনেট ছাড়াই প্রশ্নপত্র পাঠানো সম্ভব হবে। প্রতিটি যন্ত্রের (ডিভাইস) মূল্য পড়বে আনুমানিক দেড়শ` ডলার (প্রায় ১২ হাজার টাকা) করে। তিনি জানান, তারা হিসাব করে দেখেছেন, এতে সরকারের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা লাগবে। তারা পুরো বিষয়টি ভালো করে ভেবেচিন্তে দেখছেন।

বিনা ইন্টারনেটেও এ যন্ত্রে প্রশ্ন পাঠানো যাবে বলে এটিকে মোটামুটি উপযোগী পদ্ধতি মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকরা। কারণ, এতে হ্যাকারদের হাতে পড়ারও ভয় থাকবে না।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশ্নব্যাংকে শিক্ষকরা সারাবছরই প্রশ্ন পাঠাতে পারবেন। জমা থাকা হাজার হাজার প্রশ্ন থেকে পরীক্ষার দিন তা থেকে নির্ধারিত ১০টি প্রশ্ন যন্ত্রের সাহায্যে বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সাল থেকে যশোর শিক্ষা বোর্ডে প্রশ্নব্যাংক পদ্ধতির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে। এর অভিজ্ঞতা বেশ ভালো বলে মনে করছেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় নতুন এই পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা থেকে পদ্ধতিটি চালু হবে। তবে এর আগে সেমিনারের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে।

একে// এমজে

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি