প্রয়োজন ছাড়াই মেহেরপুরে প্রায় সাড়ে ছয় শতাধিক গাছ কাটার তোড়জোড়
প্রকাশিত : ১৩:৪০, ১৪ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ১৪:৪৯, ১৪ জুলাই ২০২৪
সড়ক উন্নয়নের জন্য কাটতে হবে গাছ । গাছ কাটার পূর্বেই সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রয়োজন নেই, তবুও কাটা হবে প্রায় ৬শ ৬৬টি গাছ। গাছগুলো লাল রঙের অনাকাঙ্খিত মৃত্যু পরোয়ানার চিহ্ন ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে। এই দৃশ্য মেহেরপুর-মুজিবনগর প্রধান সড়কের। মেহেরপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগ, জেলা পরিষদ ও বন বিভাগ এই গাছ গুলো কাটার দ্বায় একে অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। আর পরিবেশবিদরা বলছেন প্রয়োজন না হলে গাছ না কাটাই ভাল।
জেলা পরিষদ, বন বিভাগ এবং সড়ক ও জনপদের একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গাছগুলি প্রকৃত মালিক জেলা পরিষদ মেহেরপুর। সড়ক প্রশস্ত করণের জন্য গাছ কাটতে ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়েছিলো সড়ক ও জনপদ বিভাগ। জেলা পরিষদ গাছ কাটার প্রক্রিয়া যথা সময়ে শেষ করতে না পারায় গাছ রেখেই এবছর সড়কের কাজ সম্পন্ন করে সড়ক বিভাগ।
তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কে গাছ কাটার জন্য দেড় বছর আগে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরে সড়কের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন নতুন করে গাছ কাটলে সড়কে আবার খানাখন্দের সৃষ্টি সহ নানা জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হবে। জেলা পরিষদ বলছে বনবিভাগের জনবল সংকটের কারণে সঠিক সময়ে গাছের মূল্য নির্ধারণ সহ গাছ কাটার প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারায় দেরি হয়ে গেছে। আর বন বিভাগ বলছে তাদের দায়ীত্ব শুধু গাছ গণনা ও মূল্য নির্ধারণ করা। রাস্তা সড়ক বিভাগের আর গাছের মালিকানা জেলা পরিষদের। তবে গাছ কাটার পর জেলা পরিষদ নতুন করে গাছ রোপনের জন্য বনবিভাগকে দায়ীত্ব দিলে বন বিভাগ গাছ লাগিয়ে দেবে।
সড়ক সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার কথা বলা হলেও সড়কের কাজ হয়ে গেছে। এখন গাছ কাটা হলে সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পরিবেশের ক্ষতি হবে। প্রয়োজনে গাছ কাটা হলে গাছ লগিয়ে তারপরে কাটার আহ্বান জানান পরিবেশবিদ ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সহাকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা ও গাংনী সরকারী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এনামুল আযীম (অবঃ)। তারা দু’জনই ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, "সড়ক উন্নয়নের জন্য গাছ কাটতে জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়েছিলাম। তারা সঠিক সময়ে কাজ না করায় গাছ রেখেই সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তাই এখন আর গাছ কাটার দরকার নেই।"
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, " বনবিভাগ সময়মত সহায়তা না করায় গাছ কাটা সম্ভব হয়নি। সড়ক বিভাগকে বলেছিলাম এখন রাস্তা না করতে। তারা গাছ রেখেই কাজ সম্পন্ন করেছে। তাই এখন যে গাছগুলো না কাটলেই নয় সেগুলো কাটবো।"
তবে সাধারণ পথচারীরা অনুরোধ করছেন যেন অক্সিজেন ও ছায়াদানকারী এমন উপকারী গাছগুলো না কাটা হয়।
এমএম//
আরও পড়ুন