ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান মাহমুদুর রহমানের
প্রকাশিত : ১৬:১৯, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আমার দেশের সম্পাদক বলেছেন, ‘ জনগণকে প্রথম দিন থেকে প্রতিবাদ করা উচিত। আমরা যদি প্রথম দিক থেকে প্রতিবাদ করতাম, তাহলে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ সরকার দ্বারা এত জুলুম, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হতো না। এভাবে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও দিল্লির কাছে বিসর্জন দেওয়া হতো না। জনগণের কাছে আমার আহ্বান, আর কোনো ফ্যাসিবাদী সরকারকে দেশে জায়গায় দেবেন না। সব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই যেন অব্যাহত থাকে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালতে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের মামলার সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে হাজিরা শেষে তিনি এ আহ্বান জানান। আপিল বিষয়ে শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আপিলের রায় প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, রায়ে আমি ন্যায়বিচার পাব।
কারণ ফ্যাসিবাদের পতন ও বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়েছে। ইতিপূর্বে ফ্যাসিবাদের উত্থানের পক্ষে বিচার বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বিচার বিভাগের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকানো গেছে। আমি আশাবাদী, আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাব।’
মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ মামলা যখন করা হয় তখন জেলে বন্দি ছিলাম। এ মামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি ২০০৫ সালের পর আমি আমেরিকা যাইনি। অথচ এ মামলার সময় দেখানো হচ্ছে ২০১২ সালে। এসময় আমি পত্রিকা অফিসে বন্দি ছিলাম। পত্রিকা অফিস পুলিশ, র্যাব ঘিরে রেখেছিল। এটাতে প্রমাণিত হয় একটা রাষ্ট্র কতটা নির্মম হতে পারে মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করতে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে।
ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আমার দেশের যে লড়াই, সম্পাদক হিসেবে আমার যে লড়াই সেটা অব্যাহত থাকবে। এই মামলাটি হয়েছিল শেখ হাসিনার পুত্রকে নিয়ে, এমন শতাধিক মামলা আমার বিরুদ্ধে আছে। শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপকে নিয়ে ৩৬টি মামলা রয়েছে। এ রকম একটি মামলায়ই আমার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আমি আল্লাহর রহমতে জীবিত আসতে পেরেছি। তবে ধরে নিচ্ছি এই যে লড়াই, যত দিন জীবিত আছি এই লড়াই চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় এ মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।
২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নুর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনের সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে মাহমুদুর রহমান আত্মসমর্পণ করেন।
পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ওই বছরের ৩ অক্টোবর আপিলের শর্তে তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। পরে গত ১২ ডিসেম্বর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি।
এমবি//
আরও পড়ুন