বই নিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ১১ বছরের কানাডিয়ান বালিকা
প্রকাশিত : ২২:৫০, ৫ মার্চ ২০২০
ছোট্ট বেলায় সে খেলতে যেতো মেঘের দলে। একদিন এক মেঘবালিকা কৌতূহলবশত প্রশ্ন করে, এই তোমার নাম কি? সে মজা করে উত্তর দেয়, নাম তার ফুস মন্তর। এই নাম শুনে মেঘবালিকা রেগে আগুন। অমন নাম কি হয় কখনো? সে বললো, নিশ্চয়ই হয়। এই বলে সে যখন তার গল্প শুরু করতে যাবে। ঠিক তখনই মেঘবালিকা বলে, শুনবো না আর একই গল্প। সে বলে, মেঘবালিকা, তোমার জন্য আমি নতুন করে কল্পলোকের গল্প লিখবো। সত্যি লিখবে! বেশ তাহলে মস্ত করে লিখতে হবে। মনে থাকবে? লিখেই কিন্তু আমায় দেবে।
মিহিকা খান। তার বয়স দশ পেরিয়ে এগারোতে পড়েছে। ছোট্ট বেলায় মিহিকা হয়তো এমনি করেই তার কোন খেলার সঙ্গীকে এ কথাগুলো বলেছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, বহুমুখী গুণের অধিকারী মিহিকা ইতিমধ্যে তার এই ক্ষুদ্র জীবনের নানা মুহূর্তগুলো নিয়ে এক পৃথিবী লিখে ফেলেছে।
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে জন্ম নেয়া মিহিকা বছরের কিছু সময় কানাডায় আর কিছু সময় বাংলাদেশে কাটায়। সে ঢাকার কানাডিয়ান ট্রিলিনিয়াম স্কুলে পড়ার পাশাপাশি ভ্যানকুভারের ব্র্যান্টফোর্ড এলিমেন্টারি স্কুলেও পড়ে। ছোটোবেলা থেকেই মিহিকার শখ বই পড়া ও ছবি আঁকা। ধীরে ধীরে পিয়ানো বাজানো আর প্রোগ্রামিংয়ে আগ্রহ জন্মে মিহিকার। তবে, লেখালেখি যেনো তার জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তার বাকি সব গুণগুলোকে ছাপিয়ে এই গুণটিই যেনো সামনে চলে এসেছে। এ বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তরফদার প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় মিহিকার দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘যখন আমি ছোট’। মজার বিষয় হলো, বইটির প্রচ্ছদও এঁকেছে মিহিকা নিজেই। ইতিমধ্যেই, বইটি শিশুদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
লেখালেখির ভাবনা নিয়ে মিহিকার সাথে কথা বলে জানা যায়, খুব ছোট থেকেই সে বই পড়ে। তার পরিবারের সবাই এ ব্যাপারে তাকে উৎসাহিত করে আসছে এবং সে আরও বই লিখতে চায়। মিহিকার বাবা-মা তাকে অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছে নিয়মিত লেখার জন্য। মিহিকা লিখুক জয় গোস্বামীর মেঘবালিকার জন্য রূপকথা’র ফুস মন্তরের মতো।
‘এক পৃথিবী লিখবো আমি
এক পৃথিবী লিখবো বলে ঘর ছেড়ে সেই বেড়িয়ে গেলাম’
উল্লেখ্য, গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার লেখা প্রথম বই ‘গানওয়ালা ও লিওনার্ডো’ প্রকাশিত হয়। এ বইটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
আরও পড়ুন