বগুড়ায় মা-মেয়েকে নির্যাতন : কাউন্সিলর রুমকি ও তার মা গ্রেফতার
প্রকাশিত : ২১:৪৩, ৩০ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ১০:৪২, ৩১ জুলাই ২০১৭
বগুড়ায় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও মাসহ তার মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার মামলায় অন্যতম দুই আসামি কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি ও তার মা রুমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে ওই বাড়িতেই আত্মগোপনে থাকা বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের সভাপতি তুফান সরকারের স্ত্রী আশা খাতুন ও ড্রাইভার জিতু পুলিশি অভিযানের আগেই পালিয়ে গেছে।
বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল রোববার সন্ধ্যায় পাবনা শহর থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী।
মারজিয়া হাসান রুমকি ধর্ষণের আসামি এবং ওই ঘটনার মূল হোতা মামলার প্রধান আসামি বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকারের স্ত্রী আশা খাতুনের বড় বোন। তিনি বগুড়া পৌরসভার ২নং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর। আর রুমা খাতুন তুফানের শাশুড়ি।
বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেন, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দলরোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাবনা শহর থেকে রুমকি ও তার মা রুমা খাতুনকে (তুফানের শ্বাশুড়ি) গ্রেফতার করে। তারা এখন বগুড়ার দিকে রওনা হয়েছেন।
বগুড়ার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাবনা মেডিকেল কলেজ এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এটি তুফান সরকারের শাশুড়ি রুমি বেগমের দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়ি। ওই বাড়ি থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি পুলিশকে জানান, বেলা ১১টার দিকে ড্রাইভার জিতুর সঙ্গে নিজের প্রাইভেটকার নিয়ে আশা তার ছেলের খাবার কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফিরে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে সে অন্য কোনো স্থানে গাঢাকা দিয়েছে।
পালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে রুমকি পুলিশকে আরও জানান, ওই তরুণী আর তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার পর পুলিশ যখন অভিযান শুরু করে তখনো তারা বাড়িতেই ছিল। পরে আশা নিজেদের প্রাইভেটকার নিয়ে এসে তাদের বের করে নিয়ে যায়। শুক্রবার রাতেই তারা পাবনা শহরে পালিয়ে আসে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, তুফানের স্ত্রী আশাকে গ্রেফতারে কয়েকটি টিম মাঠে নেমেছে। আশা করছি দ্রুত তাকে গ্রেফতার করা হবে। আশা খাতুনসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। তারা শিগগিরই ধরা পড়বে বলে আমরা আশাবাদী।
এ নিয়ে ওই মামলার ১০ আসামির মধ্যে ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির বিষয়ে সাহায্যের নাম করে শহর শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক তুফান ভিকটিমকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে সে স্থানীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সহযোগিতায় ভিকটিমটিকেই এ ঘটনার জন্য দায়ী করে এবং বিচারের নামে ভিকটিম ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়। এরপর অভিযুক্ত আসামি ভিকটিম ও তার মাকে এলাকা ছাড়া করার জন্য এসিড মারার হুমকিও দেয়। শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ভিকটিম ও তার মায়ের চুল কেটে দিলে তারা থানায় মামলা করেন। এরপর শুক্রবার রাতেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন