ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৫৯, ১ আগস্ট ২০২৩ | আপডেট: ২০:০০, ১ আগস্ট ২০২৩

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার কুশীলবদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে শিগগিরই বিষয়টি সংসদে উঠবে। 

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুলের লেখা ‘পনেরো আগস্টের নেপথ্য কুশীলব’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বঙ্গবন্ধু গবেষক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ প্রমুখ।

এ সময় আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরী এবং এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চলছে। দুই খুনির মধ্যে এ এম রাশেদ চৌধুরী আমেরিকায় অবস্থান করছে। আর এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী আছে কানাডায়। তাদের আনার চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। কানাডা যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, সেটা আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা কানাডিয়ান সরকারকে অনুধাবন করানোর চেষ্টা করছি। একটা স্টেজে গিয়ে আমরা বলব, আমাদের যে এতদিনের বন্ধুত্ব, সেই বন্ধুত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে, যদি তাকে ফেরত না দেওয়া হয়। অন্যদিকে, রাশেদ চৌধুরী সম্পর্কে এতটুকু বলতে পারি, আমরা আলোচনা করছি। আপাতত এর থেকে বেশি আর কিছু বলতে চাই না।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারের আরও দুই তিনটা তাৎপর্য আছে। এই বিচার না হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা ছিল যে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারই হয় না, সেখানে আমাকে কেউ খুন করলে সেটার তো বিচার হবেই না। এটা মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। এখন কিন্তু সেই জায়গা থেকে উঠে এসেছে। এটি দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে আবারও পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল উল্লেখ করে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিতে নানা কৌশল করেছিল তৎকালীন ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানসহ অনেকে। তার আমলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। জারি করা হয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মধ্যদিয়ে দেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু গবেষক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৯ শতকে জার্মান ইতিহাসবিদ পল র‌্যাঙ্ক বলেছিলেন, ‘ইতিহাস হচ্ছে নগ্ন সত্য।’ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলকে আমি ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কারণ তিনি এই বইয়ে ইতিহাসের নগ্ন সত্য তুলে ধরেছেন। কোনো দল বা গোষ্ঠীর মতো নয়। অত্যন্ত তথ্যনিষ্ঠ এই বইটিকে আমি আকর গ্রন্থ হিসেবে মনে করছি। আগস্ট মাস শুধুমাত্র আমাদের শোকের মাস নয়, এটি পুরো বিশ্বের জন্য শোকের মাস। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে সেদিন স্বজন পরিজনসহ সর্বমোট ১৯ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। খুনিদের বিচার হয়েছে তবে তার রায় অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।

বইটির লেখক সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল অনুষ্ঠানে জানান, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করা হয়েছে। কিন্তু এই নেপথ্যে কুশীলবদের চিহ্নিত এবং বিচার করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে কারা ছিল সেই কুচক্রীমহলের কর্মকাণ্ড নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে। সেখানে দেশি-বিদেশি প্রামাণ্য তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি