ঢাকা, বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪০, ১৫ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৬:৪৫, ১৫ আগস্ট ২০১৭

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ভোর ৬টা ৩৩ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তারা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।

এসময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে সশস্ত্র সালাম প্রদর্শন করা হয়। এরপর কোরআন তেলাওয়াতের পর বিশেষ মোনাজাত করা হয় ১৫ আগস্ট নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায়।

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর পর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ও স্পিকার শিরীন শারমিন। এসময় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনী প্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা জানানোর পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া শেষে ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে ঢোকেন দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা। তারা বাড়িটি ঘুরে দেখেন। সেখানে রাখা জিনিসপত্র ও ছবিগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে স্মৃতি রোমন্থন করেন। সেখানে নফল নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াত করেন তারা। এরপর শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু গুলিবিদ্ধ হয়ে যে সিঁড়িতে পড়েছিলেন সেখানে গোলাপের পাঁপড়ি ছড়িয়ে দেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পর স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। তখন সেখানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে।

এর আগে এক বাণীতে, জাতির জনককে হারানোর দিনটি স্মরণ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, আজ থেকে ৪২ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী কর্মকর্তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্থপতি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও ঘাতকের গুলি থেকে সেদিন রেহাই পায়নি। ১৫ আগস্ট তাই জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়।

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে সকাল সাড়ে ৬টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ফুল দেন শেখ হাসিনা। সেখানে ১৫ আগস্ট নিহত তার অন্য সব স্বজনদের কবর রয়েছে।

ঢাকায় কর্মসূচির পর সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত করেন । জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুপুরে বঙ্গভবনের দোয়া মাহফিলে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকবেন।

রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে দিনটিতে।

১৫ অগাস্টের ঘটনার নেপথ্য কারণ ব্যাখ্যা করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলে পরাজিত শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল।’

রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন। আসুন, তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আত্মনিয়োগ করি।’

স্বজন হারানোর এই দিনে শোককে শক্তিতে পরিণত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

বাণীতে তিনি বলেছেন, ‘আসুন, তার ত্যাগ এবং তিতীক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।’

 

//আর//এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted







© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি