বধির হওয়ার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে শব্দ দূষণ
প্রকাশিত : ০৮:৩৭, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ০৯:২২, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
রাজধানীর বনানী আবাসিক এলাকাটি নীরব এলাকা হিসেবে পরিবেশ অধিদফতরে তালিকাভুক্ত হলেও এখানে যানবাহনের হর্নের শব্দে এক স্থানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয় না। এমনই পরিস্থিতি রাজধানীসহ পুরো দেশের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, মানুষের শব্দ গ্রহণের স্বাভাবিক মাত্রা ৪০-৫০ ডেসিবল। পরিবেশ অধিদফতরের গত বছরের জরিপে দেখা যায়, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় শব্দের মানমাত্রা ১৩০ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে। যা স্বাভাবিক মাত্রার চাইতে আড়াই থেকে তিনগুন বেশি।
শব্দ দুষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে উঠে এসেছে রাজধানীর পল্টন, শাহবাগ ও ফার্মগেট, মতিঝিল, রামপুরাসহ কয়েকটি এলাকার নাম। যানবাহনের হর্ন, ভবনের নির্মাণকাজ, কল কারখানা, এবং মাইকিংয়ের বিশেষ করে সিগন্যালগুলোতে একসঙ্গে কয়েকশ গাড়ি হর্ন বাজানোকে শব্দ দুষণের প্রধান কারণ হিসেবে দায়ি করছেন সাধারণ মানুষ।
মাত্রাতিরিক্ত শব্দের কারণে ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ১২% মানুষ শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে বলে পরিবেশ অধিদফতরের সাম্প্রতিক জরিপে উঠে আসে। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ, ফুসফুসজনিত জটিলতা, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্মরণশক্তি হ্রাস, মানসিক চাপসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা।
এক্ষেত্রে শিশু ও প্রবীণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে বলে জানান পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ। এক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দেন তিনি।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ২০০৬ সালের শব্দদূষণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সেটা রয়েছে শুধু কাগজে কলমে। বিধি অনুযায়ি হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয়ের সামনে এবং আবাসিক এলাকায় হর্ন বাজানো, মাইকিং করা সেইসঙ্গে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নামে জোরে শব্দ সৃষ্টি করা আইনত দণ্ডনীয়। তবে সেই আইনের কোনও প্রয়োগ নেই। শব্দ দূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পেছনে একেই প্রধান কারণ হিসেবে দায়ি করা হচ্ছে।
শব্দ দূষণ রোধে যুক্তরাষ্ট্রের `সেন্টার ফর হিয়ারিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন` ১৯৯৬ সাল থেকে শব্দ সচেতনতা দিবস পালন করে আসছে। তবে বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন শুরু হয় ২০০৩ সাল থেকে।
সূত্র: বিবিসি
একে//
আরও পড়ুন