ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বর্জ্য হবে সম্পদ, বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ (ভিডিও)

শিউলি শবনম

প্রকাশিত : ১২:১৯, ২৮ মার্চ ২০২৪

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ত্রুটিতে বাড়ছে পরিবেশ দূষণের ঝুঁকি। এ অবস্থায় প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার তাগিদ দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। আর বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ভূগর্ভস্থ ব্যবস্থাপনাসহ একগুচ্ছ কাজ শুরু করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি। অন্যদিকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে জাতীয় অগ্রাধিকার বিবেচনায় কাজ করার কথা জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী। 

ঢাকা মহানগরীর দুই সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট নগরীতে রূপান্তর করতে প্রতিবছরই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। 

গত ৭ বছরে দুই সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যয় করেছে ৩ হাজার ৩শ’ ২৩ কোটি টাকা। এরপরও যেখানে সেখানে খোলা আবর্জনার ভাগাড়, ময়লা সংগ্রহে সড়কে অপেক্ষায় থাকা উন্মুক্ত আবর্জনার ভ্যান, স্তূপাকারে পড়ে থাকা আবর্জনায় প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বাড়াচ্ছে নাগরিক ভোগান্তি। জনস্বাস্থ্যের উপর পড়ছে ক্ষতিকর প্রভাব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক সংগ্রহ থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ধাপেই সংস্কার জরুরি।  

পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “বিশ্ব দূষণ হচ্ছে, একইভাবে এটি মাইক্রোওয়েভ, সয়েল ওয়াটার ও এয়ারকে দূষণ করছে। অথচ এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা ওয়েস্ট এনার্জি লাভ করতে পারতাম। শুধুমাত্র আমাদের সমন্বয়ের অভাব, টেকনোলজির অভাব এবং আইডিয়া-ইমপ্লিলিটেশনের অভাবের কারণে এই বর্জ্য বর্জ্যই থেকে যাচ্ছে।”

এমন অবস্থায় কিছুটা আশার খবর দিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। শিগগিরই চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে তারা। এছাড়া জাইকার সহায়তায় হাতের স্পর্শ ছাড়াই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে আবর্জনা সরাসরি ল্যান্ডফিল্ডে নেয়ার উদ্যোগও নিতে যাচ্ছে উত্তর সিটি। 

উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে গৃহস্থালী থেকে যে বর্জ্যটা সংগ্রহ করা হয় সেটাও একটা আওতার মধ্যে আনা হচ্ছে। আমরা চাইনিজদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। প্রতিদিন ৩ হাজার টন বর্জ্য তাদেরকে দেয়া হবে। এগুলো আগুনে পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।”

পরিবেশমন্ত্রী বলছেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এরইমধ্যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। 

পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, “বর্জ্য থেকে যদি আমরা সার তৈরি করতে পারি তাহলে বাংলাদেশে যে পরিমাণ সার আমদানি করা হয় সেটা বর্জ্য থেকে পেতে পারি। ২০২৫ সাল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য বাংলাদেশে তৈরি হবে, সেটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। সুতরাং সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা এখন থেকেই ভাবছি।”

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, পরিবেশ দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর অন্তত এক লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকায় মৃত্যু হচ্ছে ১৮ হাজার মানুষের। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি