বর্ণবাদের পক্ষে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল
প্রকাশিত : ১৭:৫২, ১২ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৫:৩০, ১৭ আগস্ট ২০১৭
দাস প্রথার পক্ষে লড়েছিলেন এমন এক কনফেডারেটপন্থী জেনারেলের মূর্তি অপসারণের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করেছেন শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা। মশাল হাতে শত শত শ্বেতাঙ্গ এই মিছিলে শ্লোগান দেন "ইহুদীরা আমাদের জায়গা নিতে পারবে না" এবং "শ্বেতাঙ্গদের জীবনের মূল্য আছে।"
ভার্জিনিয়ার শার্লোটসভিল শহরের ক্যাম্পাসে এই মিছিলের সময় বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। শার্লোটসভিল শহরের মেয়র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়বাদীদের এই মিছিলকে `বর্ণবাদী` বলে বর্ণনা করে এর নিন্দা করেছেন।
বর্ণবাদ বিরোধীরা এর বিরুদ্ধে আজ সেখানে বড় আকারে বিক্ষোভ আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন।
শার্লোটসভিল শহরে জেনারেল রবাট ই লি-র যে মূর্তি রয়েছে, সেটি অপসারণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমেরিকার গৃহযুদ্ধে জেনারেল লী দাস প্রথা টিকিয়ে রাখার পক্ষে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সময় দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলো দাস প্রথা টিকিয়ে রাখার পক্ষে লড়েছিল। অনেক অঙ্গরাজ্যেই এখনো দাস প্রথার পক্ষের কনফেডারেটপন্থীদের মূর্তি রয়েছে। এমনকি অনেক জায়গায় সরকারী ভবনে পর্যন্ত এখনো কনফেডারেট পতাকা উড়ানো হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বর্ণবাদ বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে অনেক জায়গাতেই কর্তৃপক্ষ এ ধরণের মূর্তি অপসারণ করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা অবশ্য ক্ষুব্ধ।
ভার্জিনিয়ায় শার্লোটসভিলে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের এই বিক্ষোভের আয়োজক জেসন কেসলার অভিযোগ করছেন, তাদের শহরে এখন শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। সেজন্যেই তারা এই বিক্ষোভ করছেন। তাঁর ভাষায়, "শ্বেতাঙ্গরা অনেক সহ্য করেছে, তারা আর নিতে পারছে না।"
বিক্ষোভে যোগদানকারীরা মশাল বহন করে, যাকে অনেকে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী গোষ্ঠী `কু ক্লাক্স ক্লান` এর সঙ্গে তুলনা করেন।
মিছিলটি যখন ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে থমাস জেফারসনের মূর্তির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেখানে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের এই মিছিলের তীব্র সমালোচনা করে শালোর্টসভিলের মেয়র মাইক সিগনার বলেন, "এটি ছিল ঘৃণা, গোঁড়ামি, বর্ণবাদ এবং অসহিষ্ণুতার এক কাপুরোষোচিত মিছিল"।
শালোর্টসভিলকে মোটামুটি একটি উদারপন্থী শহর বলে মনে করা হয়। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শহরের ৮৬ শতাংশ ভোটার হিলারি ক্লিনটনের পক্ষে ভোট দেন।
কিন্তু নগর কর্তৃপক্ষ জেনারেল লীর মূর্তি অপসারণের উদ্যোগ নেয়ার পর শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীরা সেখানে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শ্বেতাঙ্গ চরমপন্থীরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছে বলে মনে করেন অনেক পর্যবেক্ষক।
কু ক্লাক্স ক্লানের সমর্থকরা গত মাসেও ভার্জিনিয়ায় প্রকাশ্যে মিছিল করেছিল। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
আরও পড়ুন