বাংলাদেশ ও ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে: নাহিদ
প্রকাশিত : ২১:২১, ১১ মার্চ ২০২৫

কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশ ও ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। এসময় তিনি সন্ত্রাস ও উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলেন। সেইসঙ্গে ইসলামের সহিষ্ণু ও সম্প্রীতির মূল্যবোধ তুলে ধরার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এনসিপির আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে রাজনীতিক, ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রয়োজন, যা এককভাবে সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিগুলোকেও ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আমলাতন্ত্র ও গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধের ফসল। তিনি উল্লেখ করেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন।
বাংলাদেশবিরোধী শক্তিরা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, আমাদের মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য হতে পারে, নীতিগতবিরোধ হতে পারে, তর্ক-বিতর্ক হতে পারে কিন্তু গণতান্ত্রিক সম্পর্ক, সংলাপ ও মিথস্ক্রিয়ায় যাতে কোনো ছেদ না পড়ে। জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদকে সম্পূর্ণরূপে বিলোপ সম্ভব নয়। আমরা যাতে ভুলে না যাই দেশের বিপদ এখনো কাটেনি। বাংলাদেশবিরোধী শক্তিরা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। রাজনীতিবিদদের অনৈক্য সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, মাফিয়া লুটেরা ব্যবসায়িক শ্রেণি ও ষড়যন্ত্রকারী নানা বৈদেশিক শক্তিকে সুযোগ করে দেয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের শাসনকাঠামোর পরিবর্তন চায় বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য নতুন সংবিধানের মাধ্যমে একটি নতুন রিপাবলিকের যাত্রা শুরু করা। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা করতে হবে।
নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনগত ও সামাজিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনগত ও সামাজিক উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশ ও ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। সন্ত্রাস ও উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেখাতে হবে। আমাদের ইসলামের সহিষ্ণু ও সহানুভূতিশীল মূল্যবোধের কথা বলতে হবে যা সাম্য, ইনসাফ ও সম্প্রীতির কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, একটা দীর্ঘ সময় জঞ্জাল সাফের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে পরিবর্তন ও জনগণের কল্যাণ সাধন সম্ভব। আমরা পুরোনো রাজনীতিতে ফেরত যেতে চাই না। আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন চাই। দলীয় লক্ষ্য, আদর্শের বাইরেও মুজিববাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ও সম্প্রীতির পক্ষে আমরা জাতীয় ঐক্য নির্মাণ করতে চাই। সর্বোপরি, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে সবাই মিলে আমরা একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক দায় ও দরদের বাংলাদেশ গড়বে সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
এমবি//
আরও পড়ুন