ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশকে বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেয়া যাবে না : রিজওয়ানা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, জরুরি সংস্কার না হলে বাংলাদেশ বিপজ্জনক বর্জ্যের বিশ্বব্যাপী ভাগাড়ে পরিণত হবে।  এ লক্ষ্যে জাহাজ ভাঙা শিল্পে কঠোর পরিবেশ আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

আজ রোববার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক কাঠামো’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।

জাহাজ ভাঙা শিল্পের মানবিক ও পরিবেশগত ক্ষতির দিক তুলে ধরে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘এ শিল্প মানবজীবনের বিনিময়ে চলতে পারে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জোয়ারভাটা অঞ্চলে জাহাজ ভাঙার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং এ সিদ্ধান্তকে জাতীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

রিজওয়ানা বলেন, ‘যদি এ শিল্প আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে না চলে, তাহলে এটি টিকিয়ে রাখার কোনো যুক্তি নেই। আমি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে বাংলাদেশকে বিষাক্ত বর্জ্যের ভাগাড় হওয়া থেকে রক্ষা করা যায় এবং শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।’

তিনি বলেন, জাহাজ ভাঙা শিল্পে শ্রমিকরা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে থাকেন। অথচ তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। 

পোশাক শিল্পের সঙ্গে জাহাজ ভাঙা শিল্পের তুলনা করে তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পে বিদেশি ক্রেতারা শ্রমমান বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কিন্তু জাহাজ ভাঙা শিল্পের মালিকরা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান। যে দেশে ইস্পাতের বেশিরভাগ চাহিদা বিলেত থেকে পূরণ হয়, সে দেশে এত ঝুঁকি নিয়ে কেন জাহাজ ভাঙতে হবে?’

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, একদিনেই একটি কোম্পানি চারটি দেশ থেকে অনুমোদন নথি জোগাড় করে জাহাজ ভাঙার জন্য বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।

‘দূষণকারী দায় বহন করবে’ নীতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ আইন কার্যকর না হলে এই শিল্প কেবল ‘সবুজায়নের’ নামে বৈধতা পাবে। 

তিনি জানান, ইউরোপের কোম্পানিগুলো জাহাজগুলোকে ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নিবন্ধন করে বাংলাদেশে পাঠায়। ইউরোপের কোনো দেশে কি সমুদ্রতটে জাহাজ ভাঙার অনুমতি দেওয়া হতো? তাহলে বাংলাদেশে কেন এই বৈষম্য?

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয় কীভাবে পরিবেশগত আইন লঙ্ঘন সত্ত্বেও জাহাজ ভাঙার অনুমতি দিচ্ছে?’ তিনি জানান, কিছু শিপইয়ার্ড এখনো বৈধ পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ করছে, যেখানে সম্প্রতি একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন।

রিজওয়ানা বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা কার্যকর করা জরুরি।’

অনুষ্ঠানে শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন বক্তব্য দেন।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি