বাংলাদেশের মেধাবী তরুণরা ডিজিটাল বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে: পলক
প্রকাশিত : ২১:৩০, ১১ জুন ২০২১
ফাইল ছবি
আমাদের মেধাবী তরুণরা শুধু বাংলাদেশ নয়, ডিজিটাল বিশ্বের নেতৃত্ব দেবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, তাদের সুযোগ্য করে গড়ে তুলতে চাইলে এবং আমরা তাদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল বিশ্বের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই; তাহলে ঠিক আবশ্যিক ভাবেই তাদের কম্পিউটারের ভাষা প্রোগ্রামিং শেখাতে হবে।
শুক্রবার (১১ জুন) জুম প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে ”ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা (এনএইচএসপিসি)২০২১” এর জাতীয় পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
‘জানুক সবাই দেখাও তুমি’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রোগ্রামিং করার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনেই আয়োজিত হয় এ বছরের আয়োজন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম তীক্ষ্ণ মেধাবী। তাদের মেধা কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলেই বাংলাদেশের মাটিতেই স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপণ করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। এছাড়া
তাদের মেধা-যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে যার যার স্বপ্নগুলো পূরণ করবে। কিন্তু ন্যূনতম ভাবে যদি আমরা তাদের প্রোগ্রামিং শেখাতে না পরি, তাহলে কিন্তু তাদের অনেক বড় স্বপ্ন পূরণের সুযোগটা করে দিতে পারবো না।
প্রতিমন্ত্রী তরুণদের স্বপ্ন পূরণে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যৎ দক্ষতা নির্ভর প্রযুক্তির ভাষা প্রোগ্রামিং জানা থাকলে পৃথিবীর সব ভাষাতেই যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়াও কিছুদিন পর যখন ড্রাইভারলেস গাড়িগুলো চলবে তখন এগুলো চালানোর জন্য প্রোগ্রামিং জানতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বুয়েটের সহযোগিতায় ৯ ধরণের ভাষা শেখার জন্য আমরা ‘ভাষাগুরু’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছি। এখন ভাষা না শিখেও কেউ যদি সফটওয়্যার তৈরি করতে পারেন, আপনার কছে যদি সেই অ্যাপ্লিকেশন থাকে তাহলে স্প্যানিশ বা আরবি না শিখেও যদি প্রযুক্তি ভাষা শেখাযায় তাহলে পৃথিবীর সব ভাষাতেই যোগাযোগ করা যাবে।
আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আগামী বছরেই প্রাথমিকে প্রোগ্রামিং শিক্ষার পাঠ্যবই যুক্ত করা হচ্ছে বলেও জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১ সালের রূপকল্প শুধুমাত্র শ্রমনির্ভর অর্থনীতি দিয়ে বাস্তবায়ন করা যাবে না। শ্রমনির্ভর অর্থনীতির পাশাপাশি মেধাকে সঠিকভাবে বেশি করে কাজে লাগাতে হবে, তাহলেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করা যাবে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ ।
দেশের সকল জেলা এবং ৪৪৪ উপজেলা থেকে ১১৬৯৩ জন শিক্ষার্থীরা চার ঘণ্টাব্যাপী এ প্রোগ্রামিং এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। যাদের মধ্যে ৩ হাজার ৯৫ জন শিক্ষার্থীই ছিল মেয়ে। পরে প্রতিমন্ত্রী প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
এনএইচএসপিসি ২০২১ এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরীতে বিজয়ী হয়েছে যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন দেবজ্যোতি দাশ সৌম্য, (জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ,সিলেট)। প্রথম রানার আপ -কাজী নাদিদ হোসেইন (খুলনা জিলা স্কুল,খুলনা) এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়াস লাবিব অরিয়ন (এস.এফ.এক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল,ঢাকা)।
সিনিয়র ক্যাটাগরীতে বিজয়ী হয়েছেন যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন যারিফ রহমান (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ষ্কুল,রাজশাহী), প্রথম রানার আপ মামনুন সিয়াম (চট্টগ্রাম কলেজ,চট্টগ্রাম)এবং দ্বিতীয় রানার আপ মাোঃ নাফিস উল হক সিফাত (হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,চট্রগ্রাম)।
কুইজ প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরীতে বিজয়ী হয়েছেন যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন মাহির তাজওয়ার (সেন্ট যোসেফস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,ঢাকা ), প্রথম রানার আপ নিতীশ সরকার সোম (লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,মুন্সিগঞ্জ) এবং দ্বিতীয় রানার আপ সামিরা তাসনিম (সরকারী ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,খুলনা)। সিনিয়র ক্যাটাগরীতে বিজয়ী হয়েছেন যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন নাহিয়ান ইয়াজদান রাহমান (সানবিমস,ঢাকা)।প্রথম রানার আপ ধ্রুব মণ্ডল (বরিশাল জেলা স্কুল,বরিশাল)এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়া চক্রবর্তী (মুমিনুন্নিসা সরকার মহিলা কলেজ,ময়মনসিংহ)।
বিজয়ীদের মধ্য থেকে প্রোগ্রামিং এর দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে ল্যাপটপ এবং কুইজে দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে স্মার্ট ফোন উপহার দেয়া হবে।
এসি
আরও পড়ুন