বাউলবাড়িতে সমাহিত হবেন বারী সিদ্দিকী
প্রকাশিত : ১০:৪৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:৪৭, ২৪ নভেম্বর ২০১৭
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার, গীতিকার, বংশীবাদক ও সঙ্গীতশিল্পী বারী সিদ্দিকী মারা গেছেন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা নাগাদ তিনি মারা যান।
মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার পর বারী সিদ্দিকীর ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী জানান, বাবার মরদেহ দাফন করা হবে নেত্রকোনা জেলা সদরের চল্লিশা বাজারের কার্লি গ্রামে নিজস্ব বাউলবাড়িতে। বাবা (বারী সিদ্দিকী) জীবদ্দশায় বলেছিলেন তার মরদেহ যেন বাউলবাড়িতে দাফন করা হয়। তার ইচ্ছে অনুযায়ী সেখানেই শুক্রবার বাদ আসর দাফন করা হবে।
নেত্রকোনায় বাউলবাড়িতে নেয়ার আগে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভিতে) তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১৭ নভেম্বর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন বারী সিদ্দিকী। এরপর অচেতন অবস্থায় তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। কয়েক বছর ধরে বারী সিদ্দিকী বহুমূত্র রোগ ও কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলায় এক সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বারী সিদ্দিকী। শৈশবে পরিবারের কাছে গান শেখায় হাতেখড়ি হলেও ১২ বছর বয়সেই ওস্তাদ গোপাল দত্তের কাছে তার আনুষ্ঠানিক তালিম শুরু হয়। এরপর ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ অসংখ্য গুণীশিল্পীর সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেন তিনি।
ওস্তাদ আমিনুর রহমান একটি কনসার্টে বারী সিদ্দিকীকে দেখে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। পরে ছয় বছর ধরে তিনি ওস্তাদ আমিনুর রহমানের কাছে প্রশিক্ষণ নেন।
সত্তরের দশকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাথে যুক্ত হন বারী সিদ্দিকী। ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ক্লাসিক্যাল মিউজিক নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তীতে বাঁশির প্রতিও আগ্রহী হয়ে ওঠে বাঁশি ও উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন। নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন।
দেশে ফিরে এসে লোকগীতির সাথে ক্লাসিক মিউজিকের সম্মিলনে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমাতে গান গেয়ে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন দীর্ঘদিন ধরে সঙ্গীত নিয়ে কাজ করা বারী সিদ্দিকী।
তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’ ইত্যাদি।
এসএ/