বাঙ্গালি নদীর ভাঙনে বসতভিটে হারালো ৭৫ পরিবার
প্রকাশিত : ২১:০৩, ২৩ আগস্ট ২০১৯
বেড়ে গেছে বাঙ্গালি নদীর ভাঙন। নদীতে বসতবাড়ি ও ভিটে হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে অনেকে। আবার অনেক পরিবার মাটির মায়া ছাড়তে পারেনি। কেউ তিন বার, কেউ চার বার ভাঙনের শিকার হয়েও নদীর পাশেই কোনমতে ঠিকানা গেড়ে বসবাস করছেন।
এমনই বার বার ভাঙনের শিকার পরিবারদের মধ্যে একজন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের ফহিম উদ্দিন। গত ৭ বছরে তিন বার ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটে মাটি হারিয়েছে ফহিম। এবারও তার মাথা গোজার ঠাই ও ভিটেমাটি ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। এ পর্যন্ত নদীতে চলে গেছে কচুয়া ও রামনগর গ্রামের ৭৫ টি পরিবারের ভিটেমাটি। ভাঙনের মুখে পড়েছে আরও অন্তত ৩০টি পরিবার। আবার ভাঙনের কবলে পড়ে নতুন করে কোথায় ঘর উঠাবে-এমন চিন্তা এখন তাদের মাথায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনের শিকার পরিবার গুলো ভিটেমাটি হারিয়ে আশে পাশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছেন। অল্পদিনের ব্যবধানে ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি হারিয়েছেন, কচুয়া গ্রামের আবদুস সামাদ, আসাব্বর আলী, মিজানুর রহমান, রইস উদ্দিন, সুকানু, মিনারুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, তছলিম উদ্দিন, আফছার আলী, ছাইদুল ইসলাম, সাজু মিয়া আবদুল কাফি ও রামনগর গ্রামের আবুল হোসেন প্রধান, মুনছুর আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, ছয়ফাল সহ প্রায় ৭৫টি পরিবার। নদী গিলে খেয়েছে অন্তত আড়াই’শ বিঘা ফসলি জমি।
কচুয়া গ্রামের রবিন্দ্র নাথ ও আজিজার রহমান জানান, নদী কাছে আসলেই ঘর ভেঙে সরিয়ে নিতে হয়। এভাবেই চলছে কয়েক বছর ধরে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ইতঃপূর্বে পরিদর্শন করে গেলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ভাঙনের কবলে পরা রামনগর গ্রামের আবুল হোসেন জানান, বাঙালির ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে একজন আমি। ঘরবাড়ীসহ প্রায় ১০ বিঘা জমি হারিয়েছি নদীতে। গত তিন বছরের ব্যবধানে রামনগর এলাকাতেই প্রায় ১০০ বিঘা আবাদি জমি গিলে খেয়েছে নদী।
রামনগর-ত্রিমোহনী রাস্তার প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ সম্পুর্ন নদীতে চলে গেছে। নদী ড্রেজিং করে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারলে গ্রামের বাকি অংশে ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে বলে জানালেন, রামনগর গ্রামের শিক্ষক শাহিনুর ইসলাম।
চন্দনপাট গ্রামের সাহিদুল ইসলাম ক্ষোভের সাথে জানান, গ্রাম রক্ষায় দির্ঘদিন ধরে আমরা এলাকাবাসী বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে কচুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে কথা হলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, ওই স্থানে ভাঙনের তথ্য আগে জানা ছিলো না। এ সপ্তাহেই ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে পরবর্তিতে জানানো যাবে।
আরও পড়ুন