ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪

বাজেটে সব শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন রয়েছে: অর্থমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪১, ১ জুন ২০২৩ | আপডেট: ২০:৪৩, ১ জুন ২০২৩

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সাধারণ মানুষের জীবনচলায় স্বস্তি প্রদান, অর্থনীতির টেকসই পুনরুদ্ধার এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন করে বলেন, সব শ্রেণির মানুষের আশা-প্রত্যাশা এবং উন্নয়ন ভাবনার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে এবারের বাজেটে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জোরদার করে দরিদ্র বা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির উপর মূল্যস্ফীতির চাপ লাঘবের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৩ লাখ করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সার্বজনীন পেনশন স্কীম চালু করা সম্ভব হবে বলে অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। পেনশন স্কীমের আওতায় বিভিন্ন বয়সীরা সুবিধা পাবেন বলে তিনি জানান। 

এর পাশাপাশি, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আয় বাড়ানোর ব্যাপারে নতুন নতুন করদাতা অনুসন্ধানে বিভিন্ন প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। একইসাথে কর সংক্রান্ত কিছু সংস্কারের বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রস্তাবিত বাজেটের যে আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে, তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৫.২ শতংশ। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫.২ শতাংশ। রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি এবং অন্যান্য উৎস হতে ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগামী অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন,'বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়াবে বলে আশা করি।'

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, '২০০৯ সালে সরকার গঠন করার প্রাক্কালে জাতির সামনে রূপকল্প ২০২১ পেশ করা হয়েছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী সমতাভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ। গত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক ও অবকাঠামোসহ সকল ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে তার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাপ্রসূত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' গঠনের উদ্যোগসমূহ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্বপ্নের যে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে, তার চারটি মূল স্তম্ভ হলো- স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমির ওপর ভিত্তি করে। এবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, যোগাযোগ অবকাঠামোখাতে ৩২ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা এবং কৃষিখাতে ২৫ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

সূত্র: বাসস

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি