বাদল দিনের কদম ফুল
প্রকাশিত : ২০:১৯, ২১ জুন ২০২০
কদম ফুল
কদম বাংলার চির চেনা একটি ফুলের নাম। গোলাকার সাদা হলুদ রঙে মিশ্রিত ফুলটি দেখতে যেন ভোরের উষা। রুপসী তরুর অন্যতম হলো কদম ফুল। আজ প্রকৃতি যেন কানের দুলে সেজেছে কদম ফুল দিয়ে। বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে আসে কদম ফুল। কদমের মিষ্টি হাসি আমাদের মনে করিয়ে এ বুঝি বর্ষা এলো।
সাধারণত আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতে কদম ফুল ফোটে। বাংলার গ্রাম ও বনে বনে বর্ষার বারিধারায় কদম ফুলের রেণু ভেসে চলে। বর্ষা মানেই গুচ্ছ গুচ্ছ কদম ফুলের মিষ্টি সুবাস। বাতাসে দোল খাওয়া কদম ফুলের তালে তালে পাখিরাও নেচে আজ পাগলপারা। গাইতে থাকে মিষ্টি সুরে গান।
হাজারও কবিতা ও গান দখল করে আছে কদম ফুল। বৃষ্টি স্নানে কদম ফিরে পায় তার রুপ। গাছ ভরে এই ফুলের সমাহার ঘটে। সেই মুহূর্তটি এক অপূর্ব সৌন্দর্যের। কদম ফুল নীপ নামেও পরিচিত। এ ছাড়া বৃত্তপুষ্প, মেঘাগমপ্রিয়, কর্ণপূরক, ভৃঙ্গবল্লভ, মঞ্জুকেশিনী, পুলকি, সর্ষপ, ললনাপ্রিয়, সুরভি, সিন্ধুপুষ্পও কদমের নাম। এর আদি নিবাস হলো- ভারতের উষ্ণ অঞ্চল, চীন ও মালয়ে। বিশ্বের নানা দেশে কদমগাছ দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, কম্বডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়ায় এই বৃক্ষ রয়েছে।
কদম গাছের পাতা হয় বড় বড়, ডিম্বাকৃতি, উজ্জ্বল-সবুজ, তেল-চকচকে। এর বোঁটা খুবই ছোট। নিবিড় পত্রবিন্যাসের জন্য কদম ছায়াঘন। কদম গাছ দীর্ঘ আকৃতির ও বহু শাখাবিশিষ্ট হয়ে থাকে। এই গাছের উচ্চতা ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত হয়। শীতে কদমের পাতা ঝরে এবং বসন্তে কচি পাতা গজায়। কদমের কচি পাতার রঙ হালকা সবুজ।
এক সময় প্রচুর কদম ফুলের সৈান্দর্য্য চোখে পড়ত। যান্ত্রিক সভ্যতা ও নগরায়নের যুগে মানুষের সামান্য প্রয়োজনে কেটে ফেলছে কদমসহ বহু গাছ। কদম ছাড়া বর্ষা এক রকম বেমানান। যার ফলে এখন আর আগের মতো চোখে পড়েনা গাছে ফুটে থাকা কদমের মিষ্টি হাসি।
লেখক- শিক্ষার্থী ও সংবাদদাতা, ঢাকা কলেজ।
এনএস/
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।