ঢাকা, রবিবার   ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসি’কে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন হাসনাত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৮, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

‘সময়’ টেলিভিশনের পাঁচজন গণমাধ্যমকর্মীর আকস্মিক চাকরি হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে অসত্য ও ষড়যন্ত্রমূলক বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বার্তা সংস্থা এএফপি এবং বিবিসি বাংলাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন হাসনাত।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানান হাসনাত। 

আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে আমার মনে হয় না।’  

হাসনাত আরও বলেন, ২৬ ডিসেম্বর বিবিসির একটি প্রতিবেদনে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ জনের একটি দলসহ হাসনাত আবদুল্লাহ সিটি গ্রুপের হেড অফিসে গিয়ে কয়েকজনকে চাকরি থেকে বাদ দেয়ার জন্য চাপ দেয়ার কথা বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান।’

প্রকৃত ঘটনা এমন নয় দাবি করে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন ‘সময়’ এবং ‘এখন’ টিভির কয়েকজন সাংবাদিক আমাদের কিছুটা প্ররোচিত করে গত ১৭ ডিসেম্বর বিকাল চারটার সময় টিভির এমডির কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এটা যে একটা চক্রান্ত ছিল, তা আমরা তখন বুঝতে পারিনি।

আমরা সরল মনে মি. হাসানের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা মাত্র ৩০ মিনিট ওনার সাথে আলাপ করে বেরিয়ে এসেছিলাম। অথচ বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আমি ১৮ ডিসেম্বর গিয়েছিলাম। এটি থেকে পরিষ্কার যে, এ ঘটনার সত্যতা বিবিসি বাংলা ভালোভাবে যাচাই করেনি। সময় টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মি. হাসানের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। আমাদের সংক্ষিপ্ত বৈঠকে ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতিতে সময় টেলিভিশনে চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে আমিসহ উপস্থিত ব্যক্তিরা সঠিক সংবাদ প্রচার করে ফ্যাক্ট ভিত্তিক সাংবাদিকতার আহ্বান জানিয়েছিলাম। প্রোপাগান্ডামূলক সাংবাদিকতা থেকে বেরিয়ে আসার অনুরোধ করেছিলাম।’

হাসনাত আরো বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে এবং দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, সেখানে আমি কোন সাংবাদিকের তালিকা দিইনি এবং চাকরি থেকে বাদ দেওয়া সাংবাদিকদের ব্যক্তিগতভাবে চিনিওনা। বার্তা সংস্থা এএফপি এবং বিবিসি বাংলার কাছে আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আমি সিটি গ্রুপ এবং সময় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে কোনো সংবাদিকের তালিকা দিয়েছি এবং কাউকে বরখাস্ত করতে চাপ দিয়েছি সেটির স্বপক্ষে যদি তাদের কাছে কোন প্রমাণ থেকে থাকে সেটি যেন তারা হাজির করেন। যদি হাজির করতে না পারেন, তবে তা যেন স্বীকার করেন।’ 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরো বলেন, ‘আমি মনে করে মি. হাসান অভিযোগ করেছেন, এটাই এ ধরণের একটি প্রতিবেদনের মূল ভিত্তি হতে পারে না। কারণ মি.হাসান যখন আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন তখন বলছেন, আমি কোনো ছাঁটাইয়ের তালিকা তাকে সরবরাহ করিনি বা এমন কোনো কথা বলি নি।’  

নিজের অবস্থান উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই পুরো ষড়যন্ত্রে আমাকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। চক্রান্তে পড়ে সময় টিভির মালিকের সঙ্গে কথা বলতে যাওয়াটা আমার ভুল হয়েছে, যা স্বীকার করতে আমার কোনো দ্বিধা নেই। আমি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে অবশ্যই যে কোনো গণমাধ্যম আমার বা আমাদের বিরুদ্ধে লিখবে, সেটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে আমরা আন্দোলন করেছি, রক্ত দিয়েছি। দানব হাসিনার পতন ঘটিয়েছি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যে,পেশা হিসেবে সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধনের জন্যে,সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুত করার জন্যে নয়।’

অনুরোধ জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে আমার ব্যক্তি ও সামাজিক অবস্থান ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা বন্ধ করা হোক। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় এবং এই ষড়যন্ত্রের শিকার সকলের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।’  

তবে চাকরিচ্যুত পাঁচজন সাংবাদিকের অভিযোগ, ‘গত ১৮ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ কয়েকজনকে নিয়ে সময় টিভির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেন এবং টিভি স্টেশনের ১০ জনের নামের একটি তালিকা দিয়ে তাদের চাকরিচ্যুত করতে চাপ দেন।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি