বাসযোগ্য শহরের তলানিতে ঢাকা, গুরুত্বের পরামর্শ
প্রকাশিত : ১৪:৪০, ১৫ জুলাই ২০২৪
জনঘনত্ব বাড়ার ফলে ঢাকার পরিবেশ হুমকির মুখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণেই বিশ্বের বাসযোগ্য শহরগুলোর তলানিতে অবস্থান করছে ঢাকা। পরিবেশ উন্নয়নে তৃণমূল পর্যন্ত শক্তিশালী তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ ও বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।
ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ কেটে এভাবে বানানো হয়েছে কংক্রিটের জঞ্জাল। উদ্যানে নির্মাণ কাজ করা যাবে না- এমন আইন থাকলেও গত কয়েক বছরে রাজধানীর বেশিরভাগ উদ্যানেই শোভা বাড়ানো ও উন্নয়নের নামে কাটা হয়েছে শত শত গাছ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি আদর্শ শহরে ২৫ শতাংশ গাছ থাকে। ঢাকায় আছে ১১ শতাংশের কম।
ঢাকার বাসিন্দারা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ু সেবন করছে এবং দিনদিন তাপমাত্রা বাড়ার হার ঊর্ধ্বমুখী। সেখানে এভাবে প্রতিনিয়ত গাছ কাটা হলে পরিবেশ বিপর্যয় আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, “উদ্যোনে কিভাবে কপি হাউজের সপ করে এবং উদ্যোনগুলোতে উন্নয়নের নামে কত কনস্ট্রাকশন।”
আন্তর্জাতিক গবেষণাগুলো বলছে, কোনো শহরের জনসংখ্যা ৭০ লাখের ওপর চলে গেলে সেখানে বিনিয়োগ করলেও তার কাঙ্খিত ফল আসে না, ঢাকা এখন এমন পরিস্থিতির মুখে।
বিশ্বের বাসযোগ্য শহরগুলো নিয়ে প্রকাশিত তালিকায় ঢাকার অবস্থান তলানিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্যা চিহ্নিত হলেও ঢাকার এমন বাড়তি জনসংখ্যার চাপে পরিস্থিতি বদলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় পরিবেশের এবং উন্নয়নের সার্বিক সুফল পেতে ঢাকাকে পরিকল্পিত উপায়ে বিকেন্দ্রিকরণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক দশকে প্রকৃতিকে গুরুত্ব না দিয়ে উন্নয়ন কাজ করায় এই বিনিয়োগ ঢাকাকে টেকসই করতে পারেনি।
প্রশাসনিক বা অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়ায় মানুষ প্রতিনিয়ত ঢাকামুখী হচ্ছে। ফলে পরিবেশের মান দিন দিন আরও নিম্নমুখী।
আলমগীর কবির বলেন, “চাকরি বাজার সম্পূর্ণটাই হচ্ছে ঢাকার শহরে। বিসিএস কোচিং করবে সেটাও ঢাকাতে এসে করতে হয়, ভালো লেখাপড়ার স্কুল সেগুলোও ঢাকাতে। ফলে ঢাকাতে বড় চাপ। এখানে প্রায় সাড়ে ঊনপঞ্চাশ হাজার মানুষ প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করছে।”
পরিবেশ উন্নয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদার এবং মাঠ পর্যায়ে পরিবেশ উন্নয়নে স্বয়ংসম্পূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, “সংশ্লিষ্টদের মধ্যেই সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এই সমন্বয় থাকলে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি সারাবছর এভাবে বিস্তৃঙ্খলভাবে হবেনা তখন যানজটও কমে আসবে। সেই সঙ্গে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ কমে আসবে।”
পরিবেশ বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিবেশ বিজ্ঞানকে একাডেমিক বিষয় হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে স্থান দেয়ারও পরামর্শ তাদের।
এএইচ