বাড়ছে ক্ষতিকর বিদেশি বৃক্ষ, নামছে পানির স্তর (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:১৫, ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ১১:১৫, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
রাজধানীতে দেশীয় গাছের চেয়ে ক্ষতিকর ও বিদেশি বৃক্ষের উপস্থিতি বেশি। তিনটি এলাকায় চালানো গবেষণায় দেখা যায়, ওইসব এলাকার মোট বৃক্ষের ৫১ শতাংশ ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশি গাছের আধিক্যের কারণে হুমকির সম্মুখিন রাজধানীর প্রাণ-প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র্য।
ঢাকার বয়স চারশ’ বছরেরও বেশি। এর আয়তন ৩০ হাজার ৬৪০ হেক্টর বা ৩০৬ বর্গকিলোমিটার। ১৯৮০ সালের দিকেও ১২ হাজার হেক্টরের বেশি জায়গা বৃক্ষ আচ্ছাদিত ছিল। খোলা জায়গাও ছিল অনেক।
বর্তমানে ঢাকার ৭টি বড় উদ্যান ও খোলা জায়গার মধ্যে অন্যমত রমনা, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।
এসব এলাকার বৃক্ষ প্রজাতি ও বিন্যাস নিয়ে বিদেশি অর্থায়নে গবেষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক। দেখা যায়, এই তিন এলাকায় বিদেশি গাছের আধিক্য মাত্রাতিরিক্ত। এখানে ৫১ শতাংশই বিদেশি গাছ। ৪৯ শতাংশ দেশি হলেও সংখ্যায় খুবই কম। এলাকা তিনটিতে ১৫৬ প্রজাতির বৃক্ষের মধ্যে ৩৩ শতাংশ সৌন্দর্যবর্ধক, কাষ্ঠ ২৪ শতাংশ, ওষুধি ২১ শতাংশ, ফলদ ১৯ শতাংশ এবং ৩ শতাংশ বনজ উদ্ভিদ।
এসকল গাছের মধ্যে ৩ শতাংশ আবার বিষাক্ত। এছাড়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বৃক্ষ রয়েছ ব্যাপক হারে। এখানে মাত্রাতিরিক্ত রয়েছে মেহগনি, ইউক্যালিপটাস, রেইনট্রি, দেবদারু, গগন শিরিষ-সহ আরও কিছু উদ্ভিদ।
এগুলোর অনেক প্রজাতি পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ, বলছেন গবেষকরা। বিশেষ করে ইউক্যালিপটাস মাটি থেকে অধিক পরিমাণে পানি শোষণ করার ফলে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যায় বলছেন তারা।
গবেষক মনিকা আফরোজ শিলা বলেন, “বিদেশি গাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে, এটা পরিবেশের জন্য হুমকি।”
বৃক্ষের বৈচিত্র সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে রমনা পার্কে। এরপর রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আর সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি বৃক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।
এসব প্রজাতির মধ্যে অনেকগুলো আগ্রাসী প্রজাতির। যা দেশীয় প্রজাতির উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশে বাধা প্রদান করে।
দেশীয় প্রজাতির গাছ কমতে থাকায় জীববৈচিত্র হুমকির মুখে বলছে গবেষকরা।
গবেষণা তত্ত্বাধানে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, গবেষণাটি তিন এলাকায় পরিচালিত হলেও এটি দিয়ে পুরো ঢাকার চিত্রই অনুমান করা যায়।
ঢাবি উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন বলেন, “দেশি গাছ যাতে বেশি রোপণ করা হয় সে ব্যবস্থা থাকতে হবে। বণ্যপ্রাণীর সহায়তাকারী, শোভাবর্ধনকারী এবং ঔষধি উদ্ভিদের সংখ্যা যাতে বেশি থাকে।”
আগামী কয়েক দশক ক্রমান্বয়ে দেশিবৃক্ষ রোপণ করলে বিদেশি বৃক্ষের আগ্রাসন কমে আসবে। নগরেও ফিরবে জীববৈচিত্র। ভবিষ্যতে বনায়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন