বিএনপির কর্মীরা এখন ঢাকায় রিকশা চালায় : ফখরুল
প্রকাশিত : ১৭:৩৭, ২১ জুন ২০১৮
বিএনপি নেতাকর্মীদের করুণ পরিস্থিতি তুলে ধরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সাংবাদিক ভাইয়েরা যেমন ফল বিক্রি করেছেন, আজ তেমনি আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইট গার্ডের কাজ করেন। কেউ এলাকায় থাকতে পারছেন না, সবাই চলে এসেছেন যে যার মতো করে। এই ঢাকা শহরের এক পাড়ার লোক সে পাড়ায় থাকতে পারছেন না, অন্য পাড়ায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশ সভার আয়োজন করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোজ আমরা কথা বলছি, কথা শুনছি, অনেক কথা বলছি। এখন এই কথাবার্তা খুব বেশি আমার নিজেরই শুনতে ইচ্ছে করে না, বলতেও ইচ্ছে করে না। এজন্য যে আমরা ধীরে ধীরে একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে প্রবেশ করেছি, যে গহ্ববরের শেষ দিকে আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে মারা গেছেন, নিহত হয়েছেন, অনেকে কারাগারে গেছেন, আর আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা সারাদেশে প্রায় ১৮ লাখ আসামি। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুনের পরে যেমন সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেকে ফল বিক্রি করেছেন, বায়তুল মোকাররমের সামনে কাগজ বিক্রি করেছেন, আজ আমাদের রাজনৈতিক কর্মীরা রিকশা চালান এই ঢাকায়, তারা হকার হয়েছেন, তারা কোনো বাড়ির নাইট গার্ডের কাজ করছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দলের অনেকে এসে বলে, স্যার কী হবে? আমি বলি, হতাশাই শেষ কথা হতে পারে না, লড়াই করো, লড়াই করতে করতে আমরা একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছাব-ই। আমরা তো এই বংলাদেশেই দেখেছি, নয় বছর, দশ বছর, বাংলাদেশেই তো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল দেখেছি, কিন্তু এই বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জেগে উঠেছে। এই বাংলাদেশের মানুষই কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে গেছে। আমাদেরকে সেইভাবে এগোতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রাজনীতিক দল হিসেবে, একটা মধ্যপন্থী দল হিসেবে উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে সব সময় গণতন্ত্রের রাস্তাটা খুঁজি। একটা পরিসর খুঁজি, স্পেস খুঁজি। ডেমোক্রেসির একটা স্পেস থাকলে আমরা একটু কমফোরটেবল ফিল করি; আমি একটা বক্তৃতা করব, আমি মাঠের মধ্যে একটা জনসভা করব, আমি রাস্তায় মিছিল করব, আমার বক্তব্যগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরব। জনগণ একসময় আমাদের সঙ্গে আসবে। এটাই আমরা অতীতে দেখেছি। এখনকার পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। একটা ভীতি, ত্রাসের ফোবিয়া ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। গত কয়েক বছরে তাদের নিপীড়ন, নির্যাতন, হত্যা, শিশুকে আটকে রেখে ব্লাকমেইল-কী না হয়েছে!
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, স্বাধীন বাংলাদেশের পর সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের জন্য যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া যায়, সেটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। দেখুন আপনারা, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতিতে আসা। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই বয়সেও তিনি কারাগারে।
সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে শওকত মাহমুদ, মাহামুদুর রহমান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ এ সময় বক্তৃতা করেন।
/ এআর /
আরও পড়ুন