বিএনপির প্রধান শত্রু দেশের জনগণ: শেখ পরশ
প্রকাশিত : ১৮:৩১, ১৭ আগস্ট ২০২৩
বিএনপির প্রধান শত্রু এদেশের জনগণ বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যুবলীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘১৫ আগস্টের মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা, বাঙালির পরিচয় বিনষ্ট করা, ষড়যন্ত্র ছিল আমাদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রগুলো ধ্বংস করা। আমাদের গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, অর্থনীতির স্তম্ভগুলো ধুলিসাৎ করে দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের মূল মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য হত্যার মাধ্যমে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে। সেই হত্যার ধারাবাহিকতা এখনো চলমান। রাতের অন্ধকারে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে যারা সপরিবারে হত্যা করে, নারী ও শিশুদেরকে যারা রক্ষা দেয় নাই তারা আবার বাংলাদেশের মাটিতে রাজনৈতিক দল করে গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। আমাদের কথা বলার ভাষা থাকে না।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ২১ বছর কোনো বিচার পাই নাই। দ্বারে দ্বারে দৌঁড়াতে হয়েছে। আমি মনে করি জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে আল্লাহ বিচার করেছে। কোনো মানুষের পক্ষে ওই দুর্বিসহ, অপরিসীম সাহস দেখানো সম্ভব না। জননেত্রী শেখ হাসিনার ৩৫ বছরের অপেক্ষার মাধ্যমে, বন্দুকের নলকে উপেক্ষা করে, লোভ-লালসা বিসর্জন দিয়ে, জীবনের ওপর হুমকি বলেন, আক্রমণ বলেন সেগুলো উপেক্ষা করে তিনি এই খুনিদের বিচার করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট তারা দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা করল, তারা আঘাত করল প্রেসক্লাবে কারণ তারা ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ অত্যাচার, খুন, হত্যা করেছে, আওয়ামী লীগের ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তাদের এই সব হত্যাকাণ্ড, সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, সাধারণ মানুষের আর্তনাদ যেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করে এই কারণেই প্রেসক্লাবে বোমা হামলা চালায়।’
শেখ পরশ বলেন, ‘তারা আঘাত করল বিচারালয়ে। যেন বিচারক এবং সাধারণ মানুষ ভয় পায়। ভয়-ভীতি প্রদর্শন, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র এইগুলোই বিএনপির রাজনীতির অস্ত্র, রাজনৈতিক কৌশল। এর বাইরে তারা আর কোনো কৌশল জানে না। তারা আজও সেই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। হত্যার ষড়যন্ত্র এবং লাশ ফেলানো তাদের রাজনৈতিক কৌশল। লাশের রাজনীতি তারা করতে চায়, তারা মানুষ হত্যা করে সেটা আওয়ামী লীগের ওপর চাপিয়ে দেবে। তারা অরাজকতা সৃষ্টি করে বিদেশিদের মাধ্যমে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে, যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়, তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে, উন্নয়নের সঙ্গে আছে। এই উন্নয়ন এবং দেশের শান্তি বিএনপির ভালো লাগে না। এটাকে বিনষ্ট করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের প্রধান শত্রু এদেশের জনগণ। কারণ তারা একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল এদেশের জনগণের কাছে।’
পরশ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের মুক্তিকামী জনগণ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। এ কারণে তাদের আক্রোশ এদেশের জনগণের ওপর। আওয়ামী লীগ তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এদেশের জনগণ। এ কারণে বারবার বিএনপি-জামায়াত এদেশের মানুষকে ভিকটিম বানায়, তাদের ওপরেই আঘাত করে, অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। সাধারণ মানুষকে হত্যা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চায়। তারা এদেশকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান বানাতে চায়। তখন তারা শুধু ১৫ আগস্টে জন্মদিন পালন নয়, প্রতিদিনই তারা জন্মদিন পালন করবে, উৎসব করবে। এটাই হলো বিএনপির আসল চরিত্র।’
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা প্রমুখ।
এমএম//
আরও পড়ুন