বিএসএমএমইউতে অনুষ্ঠিত হলো স্টেম সেল কনফারেন্স স্টেমকন ২০২৩
প্রকাশিত : ১৮:১০, ২৩ নভেম্বর ২০২৩
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজ হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ স্টেম সেল এন্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির ৭ম বার্ষিক আর্ন্তজাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন, স্টেমকন ২০২৩ আজ (২২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্টেম সেল সংক্রান্ত গবেষণা ও স্টেম সেলের ক্লিনিক্যাল এপ্লিকেশন আগ্রহী শতাধিক চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী দিনব্যাপি এই সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন।
সম্মেলনটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শরফুদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ স্টেম সেল এন্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশন ফর দ্যা স্টাডি অব লিভার ডিজিজেস বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখের সোসাইটির সাধারন সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
অধ্যাপক স্বন্দ্বীল তার স্বাগত বক্তব্যে সোসাইটির ৭ম সম্মেলনের প্রেক্ষাপট সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।
এবারের স্টেমকনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারন করা হয়েছে, ‘ন্যাসভ্যাক স্মার্ট ড্রাগ ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’।
উল্লেখ্য ন্যাসভ্যাক হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের চিকিৎসায় অত্যান্ত কার্যকর বলে প্রমানিত একটি নতুন ইমিউনোথেরাপী যা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিয়ে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রন করে এবং রোগীর লিভার ড্যামেজ প্রতিরোধ করে। গবেষনায় দেখা গেছে যে ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসার পর অন্য কোন চিকিৎসা ছাড়াই দশ বছর পর্যন্ত রোগীর লিভারের কোন সমস্যা দেখা দেয় না। অন্যদিকে জাপানে একটি সাম্প্রতিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসা করে প্রায় ৩৩ শতাংশ রোগীর HBsAg কমে গেছে। কিউবাসহ অপরাপর কয়েকটি দেশে রেজিস্ট্রেশনের পর আগামী বছর বাংলাদেশেও ন্যাসভ্যাক হেপাটাইটিস বি রেগাঁীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে বলে প্রত্যাশা করা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটি ন্যাসভ্যাকের রেসিপি অনুমোদন করেছেন। বাংলাদেশের বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি এদেশে ন্যাসভ্যাক উৎপাদন এবং বাজারজাতকরনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। ন্যাসভ্যাক বাংলাদেশের বাজারে চলে আসলে তা হবে এদেশে উদ্ভাবিত প্রথম ওষুধ যা এদেশের বাজারে আসবে।
সম্মেলনে কিউবা, জাপান ও বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা ন্যাসভ্যাকের নানা বিষয়ে আলোকপাত করে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। তারা জানান, হেপাটাইটিস বি ছাড়াও লিভার ক্যান্সার এবং কোভিড-১৯-এর চিকিৎসাতেও ন্যাসভ্যাক ব্যবহারে আশাব্যাঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে।
এছাড়া ন্যাসভ্যাকই প্রথম ইমিউনোথেরাপী যা মানুষের কোন ক্রনিক ইনফেকশনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
৭ম স্টেমকন ২০২৩ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে ন্যাসভ্যাক নিয়ে গবেষণায় সাফল্যে তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আশা করা হচ্ছে এই সফল গবেষনাটি ভবিষ্যতে এদেশে আরো বেশি সংখ্যাক চিকিৎসা বিজ্ঞানীকে ওষুধ উদ্ভাবনে গবেষনায় আত্মনিয়োগে উৎসাহিত করবে।
এমএম//
আরও পড়ুন