ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বিকাশের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫০, ৩ মে ২০২৩ | আপডেট: ১৭:৩৪, ৩ মে ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

বর্তমানে অনেকের কাছেই অল্প টাকা লেনেদেনের জন্য জনপ্রিয় ও সহজ সমাধান বিকাশ। দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। তবে বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙিয়ে গড়ে উঠেছে প্রতারক চক্র। যারা সহজ সরল বিকাশ গ্রাহকদের ঠকিয়ে লুটে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।   

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এজিএম রাজীব বিশ্বাস সম্প্রতি এমনই এক প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে খুইয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। 

রাজীব জানান, হঠাৎই তার ফোনে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে এবং তাকে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়মের কারণে তার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করা হচ্ছে। তবে চাইলে তিনি নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এ জন্য ফোনের অপর পাশ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়। 

এক পর্যায়ে তাকে বলা হয়, বিকাশ থেকে তাকে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা বোনাস পেয়েছেন তিনি। সেটি তুলতে হলে নিজ অ্যাকাউন্টে তাকে আরও ১৭ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করতে হবে। 

সাথে সাথে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করেন তিনি। এরপরপরই আবার দুই দফায় নিজ অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করতে বলা হলে সেটিও করেন তিনি। তবে এরপরেই দেখেন তার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স শূন্য। পুরো ঘটনাটি ঘটে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে। 

রাজীব বলেন, “অ্যাকাউন্টে আগে থেকে ১২ হাজার টাকা ছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খোয়া গেছে। আর আমি সে সময় ব্যাংকে খুব ঝামেলার মধ্যে ছিলাম, তাই যাচাই করার কথা মাথায় আসেনি। ” 

একটি বেসরকারি গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী মিনহাজুল আবেদিন জানান, তার বাবার নম্বরে ১৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর তার বাবার নম্বরে বিকাশের মেসেজ যেমন আসে ঠিক তেমন একটি মেসেজ আসে এবং সেখানে লেখা ছিল ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন হয়েছে। এরপরেই একটি নম্বর থেকে তার বাবাকে ফোন দিয়ে বলা হয়, ভুল করে টাকা চলে গেছে, সেটি ফেরত দিতে। 

কিন্তু তার বাবা ব্যালেন্স চেক করে দেখেন অতিরিক্ত টাকা আসেনি। তাই সেই যাত্রায় ৩০ হাজার টাকা গচ্চা থেকে রক্ষা পেয়েছেন মিনহাজের বাবা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গৃহিনী জানান, তাকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, তার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি সচল রাখতে হলে একটি ওটিপি কোড যাবে তার ফোনে, সেটি জানাতে হবে। তিনিও না বুঝে ওটিপি জানিয়েছিলেন। এরপরেই তার একউন্টের ব্যালেন্স শূন্য হয়ে গেছে। 

এদিকে আরেক সংবাদকর্মী বলেন, তাকে ফোন করে বলা হয় বিকাশে উপবিৃত্তির টাকা পাঠানোর জন্য তার সহযোগীতা প্রয়োজন। এ সময় তার কাছেও ওটিপি চাওয়া হয়। অথচ ওই সংবাদকর্মী জানান তার বিকাশ অ্যাকাউন্টই নেই। 

শহরেই এই চিত্র থেকেই বোঝা যায়, গ্রামাঞ্চলে এই প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম কতটা।

রাজধানীতে অল্প বেতনে কর্মরত মুর্শেদা বেগম। তিনি বলেন, গ্রামে তার বাবা থাকেন। যেকারণে প্রায়ই বিকাশে টাকা লেনদেন করতে হয়। কিছুদিন আগে তার বাবাকে একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয় তারা বিকাশ থেকে বলছেন, এসময় পিন নম্বর চাইলে সাথেসাথেই পিন নম্বর দিয়ে দেন তার বাবা। এরপরেই খোয়া যায় ১২ হাজার টাকা। 

এভাবে সারাদেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রতারক চক্র, যারা বিকাশের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করে চলেছে। যদিও প্রতিনিয়ত বিকাশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে। এসব বিজ্ঞাপনে গ্রাহকদের সবসময় সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিকাশ থেকে কেউ কখনো ফোনে কোনো তথ্য জানতে চায়না। কেউ বিকাশের কথা বলে কোনো তথ্য চাইলে যেনো গ্রাহকরা তা না দেন। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি