বিজ্ঞান ও যুদ্ধে ঘুড়ির ব্যবহার!
প্রকাশিত : ১২:৩৬, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ঘুড়ি মানেই আকাশে কাটাকুটির খেলা, আর জয় উল্লাসে মেতে ওঠা। বাড়ির ছাদে ঘুড়ি উড়াতে কেউ মজা পায় আবার কেউ মাঠে গিয়ে উড়াতে মজা পায়। যখনই অন্যের ঘুড়ির সূতায় নিজেরটা জড়িয়ে যায় তখন আবার মনে কষ্ট পায়।
খেলা বা মনোরঞ্জনের বাইরেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে ঘুড়িকে ব্যবহার করা হয়েছে। যুদ্ধ কাজে ব্যবহার হয়েছে তেমনি বিজ্ঞানেও ব্যবহার করা হয়েছে ঘুড়ি। তবে সেসব ঘুড়ির চেহারার সঙ্গে আমাদের চেনা পরিচিত ঘুড়ির তেমন কোন মিল ছিল না।
আসুন জেনে নেওয়া যাক খেলা বা মনোরঞ্জন ছাড়া আর কি কি কাজে ঘুড়ি ব্যবহার করা হয়েছে...
* দ্বাদশ শতকে চিনে শত্রু পক্ষের যুদ্ধ জাহাজ ধ্বংস করার জন্য ঘুড়িতে বিস্ফোরক বেঁধে উড়িয়ে দেওয়া হত নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বিস্ফোরণ ঘটাতে! অবশ্য এ কাজে ব্যবহৃত হত কাঠের তৈরি ঘুড়ি। চিনা ভাষায় এ ঘুড়িকে ‘মু ইয়ুয়ান’ বলা হত।
* প্রাচীনকালে চিনে গোলন্দাজ বাহিনী লক্ষ্য ঠিক রাখতে ঘুড়িকে নিশানা করে অনুশীলন করতো।
* জাপানে দুর্গের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে বার্তা পাঠাতে ঘুড়ি ব্যবহার করা হত। ঘুড়ির কাগজের উপর লিখে দেওয়া হত প্রয়োজনীয় সংকেত বা বার্তা।
* ১৭৪৯ সালে স্কটল্যান্ডের দুই বিজ্ঞানী টমাস মেলভিন ও আলেকজান্ডার উইলসন ঘুড়ির গায়ে থার্মোমিটার লাগিয়ে তাকে আকাশে উড়িয়ে পৃথিবীর উপরের স্তরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করেছিলেন।
* ১৮৮৪ সালে ঘুড়ির সঙ্গে অ্যানিমোমিটার বেঁধে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১,৩০০ ফুট উচ্চতায় পাঠিয়েছিলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডগলাস আর্কিবল্ড। ওই উচ্চতায় বাতাসের গতিবেগ কি রকম থাকে তা জানতেই তিনি এমনটা করেছিলেন।
* ১৮৯৩ সাল থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস’ ঘুড়ির সাহায্যেই বিভিন্ন জরুরি তথ্য সংগ্রহ করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানাত।
* দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্লাস্টিকের তৈরি ঘুড়ির সঙ্গে এরিয়াল জুড়ে দিয়ে সেটিকে শূন্যে ভাসিয়ে রেডিও সংকেত পাঠানো হত।
* শোনা যায়, ১৮৯৮ সালে স্পেন-আমেরিকার যুদ্ধে ঘুড়ির সঙ্গে ক্যামেরা জুড়ে দিয়ে গোপনে ছবি তোলার অভিনব চেষ্টা করা হয়েছিল।
* দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রপক্ষের রণতরী থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুড়ি উড়িয়ে অন্তত চারটি জার্মান যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল।
এএইচ/