বিদায়ী সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনা আলমের ঘনিষ্ঠতা ছিল, দাবি বাবার
প্রকাশিত : ১০:৪৪, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১১:০৭, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

প্রতারণা মামলায় মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মেঘনা আলমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মো. দেওয়ান সামিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত। নারীদের ব্যবহার করে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে সামিরের বিরুদ্ধে। একই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন মডেল মেঘনা আলমের বাবা বদরুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘সৌদি আরবের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের প্রতারণার শিকার আমার মেয়ে মেঘনা। ছয় মাস ধরে তার সঙ্গে মেয়ের ঘনিষ্ঠতা। তার দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে তাদের মধ্যে পরিচয়।’
একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, মেঘনা ‘মিস বাংলাদেশ’ নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করেছিল। তার মাধ্যমে দেশে–বিদেশে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে অনেক বিশিষ্টজন, গুণী লোকজন আসতেন। ঢাকায় সেই ধরনের একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়।
বদরুল আলম বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সব জানেন। তিনি দু’জনকে সহযোগিতা করেন। এরপর মেঘনার সঙ্গে বিদায়ী দূতের মধ্যে ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। একপর্যায়ের প্রেমের সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। এরপর বিয়ে করতে চান। গত ৪ ডিসেম্বর মেঘনা ও দুহাইলানের আংটি বদল হয়েছিল বলে দাবি করেন বদরুল।
তিনি বলেন, মেঘনার বসুন্ধরার বাসায় আসা–যাওয়া ছিল বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের। সম্পর্কের একপর্যায়ে মেঘনা জানতে পারে তার স্ত্রী ও ছেলে–মেয়ে রয়েছে। তখন সে আংটি ফেরত দেয়। সে কারো দ্বিতীয় স্ত্রী হতে চায়নি। সৌদি দূতের স্ত্রীকে ঘটনাটি জানায়। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বিদায়ী রাষ্ট্রদূত। হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে মেঘনা ফেসবুকে এ সম্পর্কে কিছু লেখা পোস্ট করেন। এরপরই মেঘনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন দুহাইলান।
মেঘনার বাবা আরও বলেন, প্রতারণার শিকার হয়েছে এটা জেনেও মেঘনা চেয়েছিল বিদায়ী রাষ্ট্রদূত তার কাছে এসে দুঃখ প্রকাশ করুক। কিন্তু সেটা করেননি তিনি। উল্টো বিনা অপরাধে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। বিষয়টির সমঝোতার চেষ্টা করা হলে শেষ পর্যন্ত হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে বদরুল বলেন, কেন আমার মেয়ে তাকে ফাঁসাবে। যদি সে অন্যায় করত তাহলে তার বিরুদ্ধে তো সুনির্দিষ্ট মামলা হত। আইন সবার জন্য সমান। আমরা এখন ন্যায় বিচার চাই। সরকার আমার মেয়ের নিরাপত্তা দেবে এটা আমার দাবি।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ডিবি পুলিশের একটি দল গত ১০ এপ্রিল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে কাওয়াই গ্রুপ ইনফরমেশন টেকনোলজির প্রধান নির্বাহী দেওয়ান সামিরকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গত, নর্থ–সাউথে পড়াশোনার সময় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন মেঘনা আলম। তার পরিবারের অন্যরা বেইলী রোডে থাকেন।
এএইচ