ঢাকা, বুধবার   ০২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় জোর দিতে হবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪৫, ১৯ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৬:২২, ১৯ মার্চ ২০১৮

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

Ekushey Television Ltd.

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের শর্ত হিসেবে যে সূচকগুলোর রয়েছে তার তিনটিতেই নির্ধারিত মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়েই উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। যা দেশের জন্য বড় একটি অর্জন।

উন্নয়নশীল দেশ হলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে জানতে একুশে টেলিভিশন অনলাইন মুখোমুখি হয় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের। তিনি বলেন, বড় এ অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের বিনিয়োগ জোর দিতে হবে। ভৌত অবকাঠামো, সামাজিক সম্পদ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটির হুবহু তুলে ধরা হলো।

জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের যে টেকনিক্যাল কমিটি আছে, তারা অর্থনীতির সূচক দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পরবর্তী পর্যায়ে কোনো কোনো দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করার ব্যাপারে তারা সুপারিশ  করবে। সৌভাগ্যের বিষয় বাংলাদেশ সেসব দেশগুলোর একটি। জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের এ সৌভাগ্যের বিষয়টি। এটার ফলে আগামী ৬ বছরে দুটি মূল্যায়নের ভিতর দিয়ে বাংলাদেশ যাবে। প্রতিটি মূল্যায়নের জন্য তিন বছর সময় লাগবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন পর্যবেক্ষণের তালিকায় গেলো।

এর ফলে যদি বড় ধরণের কোনো বিপর্যয় না আসে তবে বাংলাদেশ আগামী ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাবে।

এটার জন্য আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেটি আসবে সেটি হচ্ছে আগামী ছয় বছরে আমরা যেন উন্নয়নশীল দেশে পদার্পনের যে ধাপগুলো আছে তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করা। এজন্য বর্তমানের সূচকগুলো ধরে রাখা। সমুন্নত রাখা।এ উত্তোরণের ক্ষেত্রে নতুন যে সব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো দ্রুত অতিক্রম করা।

এর ফলে রেয়াতি সুদের ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে আমাদের বিচ্ছিন্ন হতে হবে। তাই নতুন অর্থের সন্ধ্যান করতে হবে। নতুন অর্থের জন্য বড় জায়গা দুটি আছে বলে আমি দেখি। একটি হলো দেশের ভেতরে কর আদায় বাড়াতে হবে। কর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে নিম্ন। যেসব দেশ স্বল্পোন্নতের তালিকা থেকে বের হয়েছে তারা কিন্তু বৈদেশিক বিনিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত হয়েছে। অর্থাৎ দেশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির একটি সনদ আমাদের এসেছে। তাই আমাদের বিনিয়োগ জোর দিতে হবে। আমাদের ভৌত অবকাঠামো, সামাজিক সম্পদ এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।

অর্থের সংস্থানের ব্যাপারে আমার কথা হলো আমাদের রফতানির ক্ষেত্রে পণ্যের বহুমুখীকরণ করা। বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনতে হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে কম শ্রমের উৎপাদনশীল পর্যায়ে আছে। অপরদিকে বাংলাদেশে যে প্রযুক্তি আসছে তাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে। কর্মসংস্থান কমবে না এমন একটি ব্যবস্থা বের করা জরুরি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

অর্থাৎ প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ, শিল্পখাত, শ্রমঘন, উৎপাদনশীল, প্রতিযোগিতা সক্ষম পণ্য এবং রফতানি বাজার এগুলোকে যদি আমরা একসূত্রে গাঁথতে পারি, তাহলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীলে আমাদের উত্তোরণের রাস্তাটা অনেক বেশি মসৃন হবে।

অনুলিখন : রিজাউল করিম।

আরকে// এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি