বিরল ‘লিমফেটিক ম্যালফরমেশন’ রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি
প্রকাশিত : ১৯:০৬, ১৬ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ২০:২৮, ১৬ জুলাই ২০১৭
সাতক্ষীরার মুক্তামনির রোগের নাম জানা গেছে। রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, মুক্তামনি বিরল ‘লিমফেটিক ম্যালফরমেশন’ রোগে আক্রান্ত বলেই তিনি ধারণা করছেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে চারটি রোগের কথা ধারণা করা হলেও অনেকগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে লিমফেটিক ম্যালফরমেশন রোগে আক্রান্ত মুক্তামনি। এটি একটি জন্মগত রোগ (কনজিনেটাল ডিজিস)। এ রোগের বিশেষত্ব হচ্ছে জন্মের পরপরই কিছু ক্ষেত্রে এর প্রকাশ ঘটে। তবে কারও ক্ষেত্রে রোগ প্রকাশ পায় না। মুক্তামনিরটা প্রকাশ পেয়েছে তার জন্মের দেড় বছর পর।
ইতোমধ্যে মুক্তামনিকে দুই ব্যাগ রক্ত, ১ ব্যাগ প্লাজমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. সামন্তলাল সেন।
তিনি বলেন, মুক্তামনিকে হাসপাতাল থেকে বেশি বেশি খাবার দেওয়া হচ্ছে। গত তিনদিনে মুক্তার রক্তের অনেকগুলো পরীক্ষা এবং ইউরিন টেস্ট করা হয়েছে। হয়েছে সিটিস্ক্যন, এমআরআই, ডুপ্লেক্স ও আলট্রাসোনোগ্রাফি। রক্ত ও ইউরিনের রিপোর্ট হাতে পেলেও বাকিগুলো আগামীকাল পাব। যেগুলো পেয়েছি, সেগুলো ভালো আছে, বাকিগুলো আগামীকাল পেলে তার ওপর ভিত্তি করে পুরো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত আট সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তাদের অভিমত দিয়েছেন। এর বাইরেও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কবীর চৌধুরী এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জন সহযোগী অধ্যাপক জিএম মকবুল হোসেন তাকে দেখে গিয়েছেন। প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব অভিমত দিয়েছেন। তবে টিস্যু পরীক্ষা ও বায়োপসি না করে কিছু কনফার্ম করে যাবে না। এখন এই মেডিকেল বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী তার চিকিৎসা পরিকল্পনা চলছে। সব রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
তবে মুক্তামনির চিকিৎসা সহজ হবে না বলে মনে করছেন ডা. সামন্তলাল সেন। তার মতে, এটি নিঃসন্দেহে একটি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। এখানে মূল দায়িত্ব প্লাস্টিক সার্জারির। এর সঙ্গে অর্থোপেডিক, মেডিসিন, ভাসকুলার সার্জারি টিম এরা সবাই জড়িত থাকবে। তবে এটা বলতে চাই চিকিৎসা একধাপে চলবে না। ধাপে ধাপে সার্জারি করে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যাবে।
অজানা রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি (১১)। তাকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে গত ১০ জুলাই সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মুক্তামণিকে ঢামেকে নিয়ে আসেন।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন