বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্মৃতি জাদুঘরের করুণদশা
প্রকাশিত : ১২:৩৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারিয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’। খসে পড়েছে ভবনটির পলেস্তারা। ভেঙ্গে গেছে দুটি জানালা।
এদিকে, নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগারে লাইব্রেরিয়ান নেই প্রায় দুই বছর ধরে। পত্রিকা সরবরাহও বন্ধ রয়েছে প্রায় চার বছর। এছাড়া টিউবওয়েলটিও দুই বছর ধরে নষ্ট। মোটর ঠিক থাকলেও টিউবওয়েল এবং ভূগর্স্থ পাইপ ঠিক না থাকায় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের ট্যাংকিতে দুই বছর ধরে পানি উঠানো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে টিউবওয়েলের ভূগর্স্থ পাইপ মাটির ভেতরে নিচিহ্ন হয়ে গেছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের বসতভিটায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ চত্তরে বসার টাইলসও অনেক জায়গায় উঠে গেছে।
এদিকে, স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে সীমানা প্রাচীর এবং বিশ্রামাগার নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
অন্যদিকে, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল ও কলেজটি জাতীয়করণসহ শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে শ্রেণিকক্ষ সংকট। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট স্কুল পর্যায়ে একতলা ভবন নির্মাণ শুরু হলেও সাড়ে তিন বছরেও তা শেষ হয়নি। সবেমাত্র পিলার ঢালাই পর্যন্ত হয়েছে।
তবে কলেজের একতলা ভবনটিতে ক্লাস চালু হয়েছে।
খসে পড়ছে স্মৃতি জাদুঘরের পলেস্তারা
গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক ইউনুস শেখ বলেন, পত্রিকা বন্ধসহ অন্যান্য বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাতুজ্জামান ও রুমি খানম জানান, কলেজে একটি করে টিনশেডের ঘর ও একতলা ভবন রয়েছে। ফলে তাদের শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। এছাড়া ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ না থাকায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্লাসসহ ডিজিটাল জ্ঞান অর্জনে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে।
কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক আল হেলাল ও সহকারী গ্রন্থাগারিক মাসুমা জামায়েল রাফিকা ইতি বলেন, আমাদের দাবি অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ স্কুল এবং কলেজটি জাতীয়করণ করা হোক।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ভবন সংস্কারের অভাব, পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের বাড়ির স্মৃতিস্তম্ভে সীমানা প্রাচীর না থাকাসহ বিভিন্ন সংকটের কথা শুনেছি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দ্রুত বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।
ভেঙে গেছে টিউবওয়েলের পাইপ
প্রসঙ্গত বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ করা হয়। সেই থেকে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে গ্রামটিতে।
তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ সৌন্দর্য হারিয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি। লাল-সবুজের মাঝে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ।
এএইচ
আরও পড়ুন