বৃষ্টিতে জাবির নতুন হলে জলাবদ্ধতা, বিপাকে ছাত্রীরা
প্রকাশিত : ১১:১৭, ৯ জুলাই ২০২৩
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দশতলা বিশিষ্ট ছাত্রীদের ‘১৮নং হল’ উদ্বোধন করা হয়েছে মাত্র ৬ মাস আগে। কিন্তু বর্ষায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যাচ্ছে হলের বেজমেন্টের রিডিং রুম, বৃষ্টির ঝাপটায় শুধু করিডোর নয়, ছাত্রীদের কক্ষেও ঢুকে যায় পানি। তাই, চলমান বর্ষায় আরও দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থী ও হল কর্তৃপক্ষ।
ঈদের ছুটি শেষে শনিবার (৮ জুলাই) হলে ফিরে নিজ কক্ষে কয়েক ইঞ্চি পানিতে ডুবে থাকতে দেখেন ২০২নং কক্ষের ছাত্রীরা। ভিজে গেছে মেঝেতে রাখা বই, খাতা, লেপ, তোশকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। পরবর্তীতে, নিজেরাই পানি সেঁচে কক্ষটিকে বাসযোগ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা।
পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় গত ২ জুলাই হলের বেজমেন্টের রিডিং রুমে পানি ঢুকে যায়। এসময় প্রায় কয়েক ইঞ্চি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিস পাম্পের সাহায্যে পানি নিষ্কাশন করা হয়।
এর আগে আরও দুইবার একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন হল কর্তৃপক্ষ।
৩ জুলাই সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো রিডিং রুম জুড়ে গোড়ালি সমান পানি, পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। ঈদের ছুটি থাকায় এবারে তেমন দুর্ভোগে না হলেও বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, শুধুমাত্র বেজমেন্টে নয়, বৃষ্টির পানির ঝাপটায় সরাসরি ছাত্রীদের কক্ষে ঢুকে যায় পানি। এর আগেও কয়েকবার ছাত্রীদের রুমে বৃষ্টির পানি ঢুকে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হল প্রশাসন প্রকল্প এবং প্রকৌশল কার্যালয়কে অবগত করলে তারা বৃষ্টির পানি প্রবেশ বন্ধ করতে ছাত্রীদের প্রতিটি কক্ষের দরজার সামনে সিমেন্ট দিয়ে উচু ঢালাই করে দেয়। তবে, সেটিও খুব বেশি কাজে আসেনি।
দর্শন বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ১৮নং হলের আবাসিক ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, “আলো বাতাস চলাচলের জন্য বেশ বড় ফাঁকা জায়গা রেখে হল নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি আসলেই হলের বারান্দা এবং দরজা দিয়ে রুমে পানি প্রবেশ করছে। এ ছাড়াও হলের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় বেশ কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। বাতাসের সুবিধা এখন হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এ ব্যাপারে জানতে প্রকৌশল অফিসের উপ-প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আহসান হাবীবকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে, গত ৩ জুলাই আহসান হাবিব জানিয়েছিলেন, “ড্রেন আর পাইপ দিয়ে পানি পাস করতে পারেনি। সেখানে পলিথিন জমে ছিল। পানি ওভার ফ্লো হয়ে ব্যাকে ঢুকেছে।”
এর আগেও কয়েকবার এ ঘটনা ঘটার ব্যাপারে তিনি বলেন, “কয়েকবার নয়, এর আগে একবার ঘটেছে। গতবারের ঘটনার পর পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। এবার জ্যাম হয়ে এই ঘটনা ঘটেছে।”
বার বার বেজমেন্টে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির ব্যাপারে ১৮নং হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান বলেন, “কি সমস্যা হয়েছে সেটি ইঞ্জিনিয়াররা জানেন। এ পর্যন্ত প্রায় তিনবার এই সমস্যা হলো। লেবার নিয়ে তারা তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান করে দেয়, পানি পরিষ্কার করে দেয়। কিন্তু স্থায়ী কিছু করে দিচ্ছে না, এমনকি বলেও না যে কি কারণে হচ্ছে। বারবার সমস্যা হচ্ছে, আমরা জানাচ্ছি, তারা টুকটাক কাজ করে দিচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি মেয়েদের জন্য নির্মিত ১৮নং হলের চাবি তুলে দেওয়া হয় প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ছায়েদুর রহমানের হাতে। নির্মাণ শেষে এক হাজার শিক্ষার্থীদের আবাসন সংবলিত হলটি বুঝিয়ে দেয়ার পর বারবার এ ধরণের সমস্যায় পড়াকে 'ইঞ্জিনিয়ারিং ফল্ট' হিসেবে দেখছে হল সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ
আরও পড়ুন