বেরোবিতে ৩ মাস পর ক্লাস, আবু সাঈদের বসার চেয়ার ফাঁকা
প্রকাশিত : ১৫:০২, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
টানা তিন মাস বন্ধের পর ক্লাসে ফিরেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। এতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে পুরো ক্যাম্পাসে। তবে ইংরেজি বিভাগে আবু সাঈদের বসার চেয়ারটা ফাঁকা পড়ে আছে, যেন তার অপেক্ষায়।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেরোবিতে শুরু হয় পাঠদান।
সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পাঠদান শুরু হলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন ও খোঁজখবর নেন।
দীর্ঘ সময় পর হলেও ক্লাসে ফিরতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ বলেন, “ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। সবচেয়ে বেদনার বিষয় হচ্ছে আমাদের ভাই শহীদ আবু সাঈদ আর কখনোই ক্লাসে ফিরবে না। তাকে ছাড়া বিভাগে কতটা শূন্যতা অনুভব করছি, তা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়।
‘দুই হাত টান করে বুক চিতিয়ে দেওয়া আবু সাঈদকে কাছ থেকে যেভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সেই দৃশ্য মনে হলে কিছুটা নিস্তব্ধ হয়ে যাই, নির্বাক হয়ে যাই’ যোগ করেন রাকিব।
শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আবু সাঈদ ভাই যাকে আমরা সবসময় বিপদে-আপদে পাশে পেতাম। কিন্তু আজ তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। গত ১৬ জুলাই হঠাৎ করেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ভাইয়ের বসার চেয়ারটাও এখনো ফাঁকা পড়ে আছে, যেন তার অপেক্ষায়। এ শূন্যতা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল থেকে যাবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, নতুন বাংলাদেশে টানা তিন মাস পর ক্লাস শুরু হলো। সামনে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ক্লাস গ্যাপ পূরণে পরিকল্পনা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস, আবাসিক হল ও শিক্ষক সংকট দূরীকরণ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে।
এ সময় সকলের সহযোগিতাও চান অধ্যাপক ড. শওকাত আলী। তিনি বলেন, আপনাদের জন্য আমার দরজা খোলা- যেকোনো সমস্যা, অভিযোগ সরাসরি আমাকে জানাবেন। সবাই একটা ভয়াবহ মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছে। সেসব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।
এর আগে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০৭তম জরুরি সভায় অ্যাকাডেমিক কার্যকমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
চলতি বছরে পহেলা জুলাই থেকে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে নামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বন্ধে হয়ে যায় একাডেমিক কার্যক্রম। এর মাঝে শুরু হয় কোটা সংস্কারের আন্দোলন।
গত ১৬ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা করা হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ দিন পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবং হাসিনা সরকারের পতনে ৬ আগস্ট খোলে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু হলেও স্থবিরতায় ছিল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম।
এবার ক্লাস শুরুর মধ্য দিয়ে সেই অ্যাকাডেমিক স্থবিরতা কাটল।
এএইচ
আরও পড়ুন