বেশভূষা-রাজসিক আচরণে সবার দৃষ্টি কাঁড়ছে ‘রাজা’
প্রকাশিত : ১০:৩৪, ২৬ জুন ২০২৩ | আপডেট: ১০:৩৮, ২৬ জুন ২০২৩
কক্সবাজারে কোরবানি পশুর হাট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশাল আকার ও ওজনের ‘রাজা’। চলন, আচরণ ও বেশভূষায় রাজসিক এ গরু দেখতে ভিড় করছেন ক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক দর্শনার্থী। আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে বিক্রি করতে রাজা’র দাম হাকা হয়েছে ৯ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা ৬ লাখ টাকায় কিনতে রাজী হলেও তাতে রাজি নয় মালিক।
কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার ‘আরসিজি এগ্রো’ খামার। শফিকুর রহমান ও তারেকুর রহমান নামের দুই ভাই মিলে গড়ে তোলেন বিভিন্ন গৃহপালিত পশুর এ খামার। তবে খামারটিতে রয়েছে গরু ও ছাগলের সংখ্যাধিক্য। তবে এই খামারের ‘রাজা’ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সবার।
গত ৩ বছর আগে এ খামারে জন্ম নেয় ‘অস্ট্রেলিয়ার প্রিজিয়ান’ প্রজাতির বাঁছুর রাজা।
আরসিজি এগ্রোর স্বত্ত্বাধিকারি তারেকুর রহমান বলেন, জন্মের পর থেকে খামারের অন্য বাঁছুরের চেয়ে রাজার চলন আর অঙ্গ-ভঙ্গী ছিল অভিজাত্যের। বলা যায়, অনেকটা রাজসিক আচরণের কারণে নাম রাখা হয় ‘রাজা’। এতে মালিক ও খামারের কর্মিদের বিশেষ আদর-যত্ন পেতে থাকে রাজা। গরম থেকে রেহাই পেতে ব্যবস্থা করা হয় বৈদ্যুতিক পাখার। প্রতিদিন সাবান ও শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত গোসল করা হয়।
রাজার খারার হিসেবে প্রতিদিন ৫ বেলা দেওয়া হয় সবুজ ঘাস, খৈল, খুঁড়া ও বিশেষ ধরণের ভূষি। এতে খাবার ও বিশেষ আদর-যত্ন বাবদ প্রতিদিনই খরচ পড়ে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। পাশাপাশি নিয়মিত নজর রাখা হয় রাজার শারীরিক অবস্থার প্রতি।
এতে জন্মের তিন বছরে রাজার আঁকার সাড়ে ৮ ফুট লম্বা এবং সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতা। এছাড়া ওজনে অন্তত ২৫ মণের বেশি। ৯ লাখ টাকা দাম হাঁকা হয়েছে ‘রাজা’র। ইতিমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা ৬ লাখ টাকায় কিনতে সম্মত হয়েছেন।
তবে খামারি বলছেন, গত ৩ বছরে রাজা লালন-পালন করতে যে ব্যয় হয়েছে তাতে ক্রেতাদের হাঁকানো দামে বিক্রি সম্ভব নয়। নুন্যতম ৯ লাখ টাকা পেলে বিক্রি করবেন।
এদিকে রাজসিক আচরণের ‘রাজা’কে একনজর দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন ক্রেতাদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরাও।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে পরম আদর-যত্নে লালিত পালিত রাজাকে এবারের কোরবানিতে বিক্রির কথা ভেবে আবেগ-আপ্লুত খামার মালিক-কর্মীরাও।
রোববার স্থানীয় খরুলিয়া কোরবানির পশুর হাটে নেয়া হয় রাজাকে। সেখানে রাজাকে দেখতে প্রচুর দর্শাণার্থী ভিড় করেন। রাজার মত মাথা, কপালে, গলা ও পায়ে দেয়া হয় ব্যাস্লেটসহ নানা উপকরণ। এতে কালো রঙের এই বিশাল গরুটি রাজার বেশেই সেজেছে।
কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন জানান, কক্সবাজারে গত বছরের চেয়ে চলতি বছর অনেক বেশি পশুর যোগান রয়েছে। যা চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে পাঠানো সম্ভব হবে। গবাদিপশুকে যেন কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার না করে সেজন্য আমরা খামারি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঈদুল আজহার প্রতিটি পশুরহাট মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এবারে কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলায় বাহির থেকে কোন পশু আমদানির প্রয়োজন নেই। জেলার খামার ও বিভিন্ন কৃষকের ঘরে কোরবানি যোগ্য পশু মজুদ রয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৬২২টি এবং চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৯২৩টির।
এএইচ
আরও পড়ুন