বৈশ্বিক ইস্যুতে গুরুত্ব হারাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:০৮, ১৭ জানুয়ারি ২০২৪
টেকসই প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, নিত্য নতুন বৈশ্বিক সংকটে আড়ালে চলে যাচ্ছে এতবড় মানবিক সংকটের সুরহার বিষয়টি। দাতারাও সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। এই বাস্তবতায় গতানুগতিক কূটনৈতিক উদ্যোগে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে না বলেও মত তাদের।
বৈশ্বিক নতুন নতুন ইস্যুতে গুরুত্ব হারাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট। কক্সবাজরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্পে এখন ১৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গার অনিশ্চিত জীবন।
প্রথম প্রথম পুরো বিশ্বের মানুষের সহানুভূতি পেলেও এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে এই ইস্যুটির সমাধানের পথ নিয়ে আলোচনা। যদিও কূটনৈতিক সমাধানের উদ্যোগের পথে সব সময় হেঁটেছে বাংলাদেশ সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। আশা করছি, কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে।”
গেল বছরের শেষ নাগাদ পাইলট প্রকল্পে পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন হবার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ডক্টর সাহাব এনাম খান বলেন, “রোহিঙ্গা বিষয়টিকে গতানুগতিক চিন্তাধারায় করা যাবেনা। ক্রিয়েটিভভাবে চিন্তা করতে হবে এবং অনেকগুলো ফ্রন্ট ওপেন করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বার্মা অ্যাক্ট করেছে, সুতরাং সেই বার্মা অ্যাক্টের মাধ্যমে এই অঞ্চলে কি ধরনের পাওয়ার পলিটিক্স হবে সেগুলোও এখন ভাববার বিষয়।”
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বলেন, “তারা তো তিনভাবে দেখে- দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক। সুতরাং তাদের অনেকগুলো ফ্রেম আছে, সেই ফ্রেমগুলো আমাদেরকে বুঝতে হবে। বাস্তবতার আলোকে আমাদেরকে বাড়তি সৃজনশীল হওয়া লাগবে।”
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধান না হলে ঘটনার পেছনে যে বিশ্ব রাজনীতি-তার খেসারত গুনতে হবে সব জাতিগোষ্ঠীকেই।
এম. হুমায়ুন কবির বলেন, “পাশ্চত্য জগত আমাদেরকে বড়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়। আবার চীন সহায়তা দেয় দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানের জন্য। কাজেই আমাকে কাউকে ছেড়ে কাউকে ধরলে হবে না। সকলের সাথেই চলতে হবে বিভিন্ন কারণে।”
চীনের মধ্যস্থতায় ত্রি-পাক্ষিক ব্যবস্থাপনা থাকতেই হবে। এর সাথে অন্যান্য পরাশক্তিদের সাথেও একই ব্যবস্থাপনার কথা বলছেন গবেষকরা।
অধ্যাপক ডক্টর সাহাব এনাম খান বলেন, “শুধুমাত্র সামরিক সরকার নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। বার্মা এখন গ্লোবাল এটেনশনের সেন্টারে আছে। সেটা রাশিয়ার জন্য হোক, চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হোক। সুতরাং বাংলাদেশের জন্য এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনটা খুব সহজ হবে তা কিন্তু নয়।”
চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপাক্ষিক ব্যবস্থা থাকলেই হবে, এর সঙ্গে অন্যান্য পরাশক্তিদের ব্যবস্থার কথাও বলছেন গবেষকরা।
অধ্যাপক ডক্টর সাহাব এনাম খান বলেন, “চীন এখন পর্যন্ত একটা টেনজিবল প্রোপজাল দিয়েছে, অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো এখনও দেয়নি। এর বাইরেও আমাদের অনেক কিছু চিন্তা করতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আমাদের একটা ডেডিকেটেড সংস্থা থাকা দরকার।”
সংকটের উৎস যেহেতু মিয়ানমারে সমাধানও খুজতে হবে সেখানেই।
এএইচ