ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

বৈশ্বিক মহামারি ও সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধে তরুণদের ভূমিকা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

বৈশ্বিক মহামারি পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের মত সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের তরুণ প্রজন্ম। সামাজিক পরিবর্তনে তরুণ নেতৃত্ব এবং তাদের ভাবনা ও মতামতকে সবসময় গুরুত্ব দিয়ে থাকে ব্র্যাক। গেল বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে ব্র্যাকের হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রাম। এ বছরও ব্র্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রাম “বৈশ্বিক মহামারি ও সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধে তরুণদের ভূমিকা” বিষয়ে দ্বিতীয় আসর আয়োজন করছে। এই আসরে নিজেদের কথা তুলে ধরেন তরুণ প্রজন্মরা। 

২৭শে ডিসেম্বর, ২০২০ ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে আওয়জিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান। এছাড়া ব্র্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের ডিরেক্টর সাজেদুল হাসান, বাংলাদেশ নারী জাতিয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাথিরা জাকির জেসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে অংশগ্রহণ করেন।

কিভাবে সামাজিক দুর্যোগ বন্ধ করা যায়, কিভাবে পদক্ষেপ নিলে প্রান্তিক পর্যায়ে ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করা যায়। এ প্রসঙ্গে ব্যাক হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রামের পরিচালক সাজেদুল হাসান বলেন তরুণদের একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিতেই কাজ করে যাচ্ছে ব্র্যাক। এই ইয়োথ এনগেজমেন্ট হতে পারবে অনেক বড় একটা প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে সবাই একটা পরিচয় পাবে। সবাই একা সুযোগ পাবে মানুষের পাশে দাড়ানো। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি সামাজিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে তরুণ সমাজের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে বলে জানান সাজেদুল হাসান। তিনি বলেন যারা সাড়াদান কর্মসূচিতে কাজ করতে চায় তাদের একটা ডেটাবেজ তৈরি করা প্রয়োজন। এতে এলাকা ভিত্তিক কার্যক্রম করতে সুবিধা হবে। তিনি আরও বলেন জনসচেতনতা এবং সবার কাছে সতর্ক বার্তা পৌছে দিতে কাজ করতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। যেমন টিকা যখন আসবে বাংলাদেশে তখন এই তরুণ প্রজন্মই পারবে ক্যাম্পেইন করে সচেতন করতে। এবং পাশাপাশি কমিউনিটি রেডিওতে সচেতনতার কথা সবার কাছে পৌঁছে দিতে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা পরিষদের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন আমাদের সামাজিক দুর্যোগের জন্য তেমন ওষুধ প্রয়োজন। এর পেছনে যেই অপশক্তি আছে তাদের যদি বের করা যায় তাহলে এই চক্রটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। একে একে সব সমস্যার সমাধান হকে। তিনি আরও বলেন প্রত্যেক তরুণের একটা নিজেস্ব দায়িত্ব আছে, সেটা তারা পালন করলেই ফলাফল আসবে।

ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সাথিরা জাকির জেসি বলেন খেলাধুলা থেকে শুরু করে পড়াশুনা, সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ছেলেদের থেকে মেয়েরা এগিয়ে, তবুও বৈষম্যের শিকার হতে হয় নারীদের। এখন তরুণরাই পারবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে এইসব কিছু প্রতিরোধ করতে। 
ড. মো. এনামুর রহমান বলেন দুর্যোগে বাংলাদেশ সরকার এখন বিশ্বের রোল মডেল। আগে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিই ছিলো, এখন সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা ঝুঁকি নিরসনে কাজ করছি। তিনি তরুণদের অঙ্গিকার দেন তাদের জন্য তরুণদের কল্যাণে বিনিয়োগ আরও বাড়াবেন। সেই সাথে নিরাপত্তার জন্য যেই ৯৯৯ অ্যাপস আছে সেটার কার্যক্ষমতা আইসিটির সাথে কথা বলে সহজ ও উন্নত করবেন। প্রতিমন্ত্রী ব্র্যাকের এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এমন আয়োজন বার বার হলেই সচেতনতা বাড়বে, তাদের প্রতি সরকার যেই পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, সেটা অব্যহত থাকবে।

বৈশ্বিক মহামারিতে আচ্ছন্ন এখন গোটা বিশ্ব। করোনাভাইরাসের প্রকোপ সমগ্র বিশ্বে যেমন ছড়িয়েছে, রেহাই পায় নি বাংলাদেশও । চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দেশে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি এবং শনাক্ত হওয়ায় মোট রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। 

বৈশ্বিক এই মহামারির সময়ও কমেনি নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের মত সামাজিক দুর্যোগ। দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে নানা তৎপরতার পরও নারীকে এখনও প্রতিকূল পরিবেশে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। বরং করোনাভাইরাস মহামারীর পরিবর্তিত বাস্তবতায় নারীর প্রতি সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। 

সমীক্ষা বলছে নির্যাতনের শিকার নারীদের সহায়তায় সরকারের জাতীয় হেল্পলাইন ‘১০৯’ এ চলতি বছরের অগাস্ট পর্যন্ত ৯ লাখ ৩ হাজার ৮৩০ জন নারী ও শিশু সহায়তা নিয়েছেন। ২০১৮ সালে যার সংখ্যা ছিলো ৬ লাখ ৫০ হাজার এবং ২০১৯ সালে ১৮ লাখ ১১ হাজার নারী ও শিশু চিকিৎসা সেবা, কাউন্সেলিং, পুলিশের সহযোগিতা, আইনী ও অন্যান্য সহযোগিতা নিয়েছেন। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি