ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট পাওয়ার বিষয়ে যা বললেন টিউলিপ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৫, ৫ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১০:১১, ৫ জানুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর চাপে পড়েন টিউলিপ সিদ্দিক। এ নিয়ে টিউলিপকে একাধিকবার প্রশ্ন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। 

টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় অবস্থিত ২ শয্যাকক্ষের সেই ফ্ল্যাটটি তিনি তাঁর স্বৈরশাসক খালার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে পেয়েছিলেন কি না।
 
এর জবাবে টিউলিপ জানান, উপহার হিসেবে নয় বরং তাঁর বাবা-মা তাকে এই ফ্ল্যাটটি কিনে দিয়েছিলেন। এই অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এই সিটি মিনিস্টার। 

তবে লেবার পার্টির সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ওই ফ্ল্যাটটি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে টিউলিপকে দিয়েছিলেন ওই ডেভেলপার। 

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
 
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি তাকে দেয়া হয়। ফ্ল্যাটটি ২০০১ সালে ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বর্তমানে পাউন্ডের বিপরীতে টাকার দর অনুযায়ী যা প্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে কেনা হয়। 
 
ফ্ল্যাটটির বর্তমান দাম নথিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট গত আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (প্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা) বিক্রি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানাশোনা আছে এমন একজন ব্যক্তি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের দুর্দিনে তাঁকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পদ’ টিউলিপকে দিয়েছিলেন।

বর্তমানে আবদুল মোতালিফ দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন। ভোটার নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে, ওই এলাকায় মোতালিফের ঠিকানায় মজিবুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বসবাস করেন। মজিবুলের বাবা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।

মুজিবুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, তিনি ফ্ল্যাটটি ২০০১ সালে কিনেছিলেন। কিন্তু এই বিষয়ে আর কোনো তথ্য জানাননি তিনি।

জমি রেজিস্ট্রি রেকর্ডের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল জানায়, ২০০৪ সালের সালের নভেম্বরে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা পান টিউলিপ। তখন তিনি লন্ডনের কিংস কলেজে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং তাঁর কোনো আয় ছিল না। তবে এ সম্পত্তির কোনো মর্টগেজ ছিল না এবং এর কোনো মূল্যও উল্লেখ ছিল না। এর মানে এটি কেনা হয়নি বরং তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গত জুলাইতেও ডেইলি মেইল টিউলিপ সিদ্দিক এবং লেবার পার্টির কাছে এ অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করে। তবে তখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি পায় সংবাদমাধ্যমটি। এরপর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি আর প্রকাশ করেনি ডেইলি মেইল। 

৪২ বছর বয়সী টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির সদস্য হন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। ২০১৫ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড আসন থেকে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হন। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ওই আসনে চার বার প্রার্থী হয়েছেন টিউলিপ, প্রতিবারই জয়ী হয়েছেন।

সম্প্রতি রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি